|
Date: 2024-05-11 07:25:39 |
মোঃ মেশকাত হোসেন
আক্কেলপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বেগুণী রঙের ফুলে সজ্জিত হয়ে আছে মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের সামনে রয়েছে জারুল গাছ। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও গাছটি সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কলেজ গেট এলাকার। সৌন্দর্যের পাশাপাশি গাছটির রয়ে নানা ঔষধি গুণাগুণ।
বিভিন্ন কবির কবিতায় উঠে এসছে গাছটির নাম। তাই কবি জীবনানন্দ দাশ তার কবিতায় লিখেছেন, “এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে সবচেয়ে সুন্দর করুণ, সেখানে সবুজ ডাঙা ভ’রে আছে মধুকূপী ঘাসে অবিরল, সেখানে গাছের নাম : কাঁঠাল, অশ্বথ, বট, জারুল, হিজল, সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ”।
জানা গেছে, ফুলটির ইংরেজি নাম: Giant Crape-myrtle , গাছের বৈজ্ঞানিক নাম: Lagerstroemia Speciosa। এই গাছটির আদি নিবাস শ্রীলঙ্কায়। ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ জারুল। তবে বাংলাদেশ সহ চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে এই বৃক্ষের দেখা মিলে। গ্রীষ্মের শুরু থেকে এই ফুল শরৎ পর্যন্ত দেখা যায়। ফুলটি লালচে বেগুণী রঙের হয়ে থাকে। ফুল শেষে গাছে বীজ হয় ও বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। এই গাছ সাধারণত ১০ থেকে ১৫ মিটার উঁচু হয়। গাছটির নানা ভেষজ গুণাগুণ রয়েছে। যেমন- ডায়াবেটিস, জ্বর, অনিদ্রা, কাশি, অজীর্ণতায় অনেক উপকারী। তবে নানা কারণে প্রকৃতি থেকে বিলীন হওয়ার পথে এই গাছ।
প্রকৃতির এমনই এক সৌন্দর্য ধারণ করে আক্কেলপুর পৌর এলাকার মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের সামনে রয়েছে জারুল গাছ। যার বেগুনি ফুলের সৌন্দর্য প্রতিটি পথচারীর নজর কাড়ে। তবে গাছটি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার এমনটিও জানিয়েছেন অনেকেই।
পৌর শহরের বাসিন্দা শফিউল আলম বলেন, ‘প্রতি বছর গ্রীষ্মের এই সময় মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের সামনে এক মাত্র জারুল গাছটি বেগুনি রংয়ের ফুলে ছেয়ে যায়। এতে মনোমুগ্ধকর এক আবেশ তৈরী হয়। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য দেখতে খুবই ভাল লাগে’।
আক্কেলপুর হাটে বাজার করতে আসা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘জারুল গাছটির কারণে শহরের নান্দনিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন গাছ। নয়নাভিরাম এই গাছের কারণে আমাদের হাটেরও সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে’।
আক্কেলপুর মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক অধির চন্দ্র দেবনাথ এবং মাতরুবা নাসরিন জানান, জারুল গাছটি Lythraccac গোত্রের একটি বৃক্ষ। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর দেখা পাওয়া যায়। কাঠের আঁশ মসৃন, সরু ও সোজা। কাঠ লালচে বর্ণের ও টেকসই হয়। পানিতে সহজে এই কাঠ পঁচে না। গাছটি দির্ঘদিন প্রকৃতিতে টিকে থাকে। বয়ষ্ক গাছের কাঠ দিয়ে বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরী করা যায়। গাছটির ঔষধি গুণাগুনও রয়েছে।
© Deshchitro 2024