কক্সবাজারে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপিত হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা। ‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’ এ অহিংস বাণীর প্রচারক গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব, বুদ্ধত্বলাভ ও মহা-পরিনির্বাণের স্মৃতি বিজড়িত দিনটিকে বুদ্ধ পূর্ণিমা হিসেবে পালন করেন বৌদ্ধরা।


বৌদ্ধ ধর্মীয় বিশ্বাস মতে, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে এ দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে নাম দেয়া হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’।


দিবসটি উপলক্ষে কক্সবাজারে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার ও পল্লিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সকালে বুদ্ধপূজা, শীলগ্রহণ, পিণ্ডদান, ভিক্ষুসংঘের প্রাতরাশ, রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও দুপুরে জ্ঞাতি ভোজনসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে দিনটি পালন করা হচ্ছে।


দিনটি পালনে জেলার সবচেয়ে বড় ‘শান্তির শোভাযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে উখিয়া উপজেলায়। শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ শোভাযাত্রায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি উখিয়ার কুতুপালং উচ্চবিদ্যালয় এলাকা থেকে শুরু হয়ে মরিচ্যা স্টেশনের দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে কোটবাজার কেন্দ্রীয় মহাশ্মশান ভাবনা বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে শেষ। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সদ্ধর্ম সভা।


আয়োজকরা জানিয়েছেন, দিনটি পালন উপলক্ষে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় ভিক্ষু-সংঘের সংক্রমণ, সূত্রপাঠ ও শ্রবণ, উপোসথ গ্রহণ এবং ধ্যান চর্চা।


এদিকে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে কক্সবাজার শহরের অগ্গমেধা ক্যাংসহ রাখাইন পল্লি ও রামু উপজেলার ঐতিহাসিক রামকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারসহ জেলার বিভিন্ন বৌদ্ধ পল্লিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের পাশাপাশি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করা হচ্ছে।


দিবসটি উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। বৈশাখ মাসের এ পূর্ণিমায় মহামানব বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে খ্যাত। খ্রিষ্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। আবার ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি মহা-পরিনির্বাণ লাভ করেন। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্ব লাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধ ধর্ম প্রবর্তিত হয়।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024