কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট। প্রথমে দেখে বুঝার উপায় নেই এখানে কোন দুর্যোগ চলছে। হাজারো পর্যটক এবং স্থানীয়রা নেমে পড়েছে সৈকতে। তাদের বাঁধা দিচ্ছে লাইফগার্ড এবং বিচ কর্মী। কিন্তু কে শুনে কার কথা! তাদের সাথে যেন চোর-পুলিশ খেলা চলছে। যেনো আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া ৯ নং মহাবিপদ সংকেত কিছুই না তাদের কাছে।

রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা এবং লাবণী পয়েন্টে ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তাদের বারবার মাইকিং এবং বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করলেও মানছে না কোন বাঁধা।

তাদেরই একজন মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক ওসমান আলী বললেন, মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়ে সাগরের উত্তাল ঢেউ দেখে ঘরে বসে থাকতে পারিনি। তাই কক্সবাজার চলে এলাম ঘূর্ণিঝড় দেখতে। খুবই ভালো লাগছে।

এই পর্যটককে নিরাপত্তার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে বলেন, আমরাতো সতর্কতা অবলম্বন করেই সমুদ্র নেমেছি। আপনাদের কি সমস্যা। আমরা নিরাপদে ভ্রমণ করছি। আমরা বুঝবো বাকিটা।

ঢাকার গুলশান বাটারা থেকে ঘুরতে আসা আরেক পর্যটক ইসহাক গাজী বলেন, আমরাতো ১০ দিন আগে থেকে পরিকল্পনা করে কক্সবাজারে ঘুরতে এসেছি। এই অবস্থা হবে সেটাতো জানি না। আমরা তিনদিনের পরিকল্পনা নিয়ে এসেছি। আমরা ঘূর্ণিঝড়ে পড়ে গেছি। এখন সমুদ্র দেখতে আনন্দ লাগছে আবার ভয়ও লাগছে।

বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র লাইফগার্ড রশিদ আহমদ বলেন, আমরা একপাশ থেকে তুলে দিলে অন্যপাশ থেকে আবার পর্যটকরা নেমে পড়ছে। আবার স্থানীয়রাও ঘূর্ণিঝড় দেখার জন্য সমুদ্র আসছে। আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বিচ কর্মীরাও কাজ করছে কিন্তু কেউ পেরে উঠছি না। যেন আমাদের সাথে চোর-পুলিশ খেলা হচ্ছে।

বীচ কর্মী শফিউল আলম বলেন, আমরা ম্যাজিস্ট্রেট স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী মাইকিং করে যাচ্ছি। সকলকে সামুদ্র সৈকত এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য বলছি। কিন্তু অনেকেই এ নির্দেশনা মানছে না।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পরিস্থিতি দেখতে এসে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান এবিষয়ে বলেন, আমরা সৈকতের কিটকট, জেটস্কি, বিচবাইকসহ সকল সেবা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। সৈকত এলাকা ছাড়ার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মী, লাইফগার্ড কাজ করছে। এছাড়া পর্যটকদেরও অনুরোধ জানাচ্ছি আপনারা আমাদের এদিকে ব্যাস্ত রাখবেন না। আমাদের পুরো জেলার মানুষের জন্য কাজ করতে হচ্ছে। আপনারা দয়া করে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করুন।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024