|
Date: 2024-05-27 12:46:53 |
কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় অর্ধশত কাঁচা ঘরবাড়ি ও ভেঙেছে বেরিবাঁধ।
রোববার (২৬ মে) সকালে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৯ নং মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়।রিমালের প্রভাবে মধ্যরাত থেকেই ঝোড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টি শুরু হয় কুতুবদিয়ায়। এরমধ্যে সোমবার (২৭ মে) সকালের দিকে হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও বাতাস শুরু হলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়। বেড়িবাঁধের পাশে থাকা জোয়ারে পানির ঢেউয়ের আঘাতে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন ২ জন।প্রচণ্ড বাতাসে উপজেলা সদরে মাস্টার তালেব উল্লাহ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৩ তলার টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। বড়ঘোপ ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার একাডেমিক ভবনের ও ছমদিয়া আলিম মাদরাসা ভবনের টিনের ছাত উড়ে গেছে।
স্হানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী আবু আক্কাস ইসতিয়াক জানান, উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের বাতিঘরের পশ্চিমে ও কৈয়ারবিল ইউনিয়ন সীমান্ত পয়েন্টে বেরিবাধ ভাংগা রয়েছে জোয়ারের পানি ফুসে বাধঁ ডিঙ্গিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছে । ফসলাদি কিছু বাতাসে নুইয়ে পড়ছে তবে কয়েকটি ঘরবাড়ির চালের টিন উড়ে গেলেও পাশাপাশি নদীতে ভাটা থাকায় প্লাবিত হয়নি,তবে ভাংগা বেরিবাধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।এছাড়া উপজেলা আলী আকবরডেইল ইউনিয়নের তেলি পাড়া ও পন্ডিত পাড়ার পশ্চিমে বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের পানি বৃদ্বি পাওয়ায় বাধঁ ডিঙ্গিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।এরশাদ নামে একজন জানান, 'গতকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়েছে।বাড়িঘরের চাল উড়ে গেছে, ফসলাদীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুতুবদিয়া কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী এলটন চাকমা।
উপজেলা বিদ্যু অফিস সুত্রে জানা যায়, রোববার রাতে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে বেশ কিছু এলাকায় গাছপালা পড়ে তার ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মেরামতের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে। তবে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে একটু সময় লাগবে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সোমবার দুপুর ২টার দিকে আলী আকবর ডেইল হকদার পাড়ার মো. তাহেরের ছেলে শহীদ (১৬) ও তেলি পাড়ার আলতাফ মিয়ার ছেলে হাবিবুর (২৬) ঝড়ের কবলে পড়ে আহত হলে হাসপাতালে নিয়ে আসে স্থানীয় যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা। এ সময় ডা. বিপ্লব বড়ুয়া শহীদকে ভর্তি দেন ও হাবিবকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে কাচাঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৩৩টির আংশিক ও ২টি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈনুল হোসেন চৌধুরী জানান, প্রচণ্ড বাতাস বৃষ্টিতে এ পর্যন্ত ৩৫টি কাচা ঘরবাড়ি ক্ষয়ক্ষতির খবর জানতে পেরেছেন। আরো বিস্তারিত জানতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
© Deshchitro 2024