জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় আরিফ মিয়া নামে চাল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বুরুঙ্গিকাঘাতে (বস্তা থেকে চাল বেরার করার যন্ত্র) স্থানীয় এক সাংবাদিককে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহত সাংবাদিকের নাম এনামুল হক। তিনি দৈনিক কালবেলা পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি পদে কর্মরত। অভিযুক্ত চাল ব্যবসায়ী আরিফ মিয়া উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের সিরাজাবাদ মরাকান্দি গ্রামের মৃত বানিছ উদ্দিনের ছেলে। আরিফ মিয়ার দাবি, তাঁর কাছে চাঁদার টাকা চাওয়ায় সাংবাদিক এনামুল হকের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে।


সোমবার (২৭ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইসলামপুর পৌরসভার গাঁওকুড়া গ্রামস্থ মা রাইস মিলে ওই ঘটনাটি ঘটে।



স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের ভেঙ্গুরা গ্রামের 

 মৃত আসাদুজ্জামান ডালির ছেলে রাব্বি মিয়ার মালিকানাধীন গাঁওকুড়া এলাকাস্থ 'মা রাইচ মিল' নামে একটি চাল ব্যবসাকেন্দ্র ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করে আসছেন আরিফ মিয়া। ঘটনার সময় সাংবাদিক 

এনামুল হকের নেতৃত্বে বাংলা টিভির জেলা প্রতিনিধি 

মুবাশ্বির আলন রাহুল এবং দৈনিক সমাচার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সুজাউর রহমান রানা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ওই রাইচ মিলে প্রবেশ করেন। এসময় 

রাইচ মিল ভাড়াটিয়া আরিফ মিয়া এবং সংবাদ কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে।


একপর্যায়ে আরিফ মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর হাতে থাকা বুরুঙ্গি দিয়ে এনামুল হকের বুকে আঘাত করে। এতে  এনামুল হকের বুকের নিচে বামপাশে জখম হয়। 

খবর পেয়ে ইসলামপুর থানা-পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত সাংবাদিক এনামুলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঠান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক  প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। 



দৈনিক সমাচার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সুজাউর রহমান রানা বলেন, 'আমরা তিন সংবাদ কর্মী সরকারি বরাদ্দের ভিজিএফের চল মজুদ রয়েছে মর্মে খোঁজ নিতে ওই রাইচ মিলে যাই। সেখানে তথ্য চাওয়ায় মিল মালিক আরিফ মিয়া আমাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বুরুঙ্গি দিয়ে সাংবাদিক এনামুল হকের পেটে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে।


অভিযুক্ত চাল ব্যবসায়ী আরিফ মিয়া বলেন, 'কিছু দিন আগে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে সাংবাদিক এনামুল আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আজ অপরিচিত দুই সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে রাইচ মিলে এসে আগের মতই ভয়ভীতি দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে এনামুল হক। এনিয়ে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে এনামুলের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।'


স্থানীয় কর্মরত সাংবাদিকদের দাবি, সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলা সন্ত্রাসী কর্যকলাপ। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা জরুরি।'



ইসলামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন তালুকদার বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত সাংবাদিক এনামুল হককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'ওই রাইচ মিলটি পরিদর্শন করেছি। সেখানে ভিজিএফের কোনো চাল মজুদ রাখার আলামত পাওয়া যায়নি। এছাড়া গত রমজানের ঈদের পর ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়নি। সেক্ষেত্রে তো কালোবাজারে ক্রয় করা চাল ওই মিলে মজুদ থাকার কথা নয়।'


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024