ঘূর্নিঝড় রেমালে উপকূলীয় শ্যামনগরে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ
রনজিৎ বর্মন শ্যামনগরউপজেলা প্রতিনিধি ঃ ঘূর্নিঝড় রেমালের কারণে উপকূলীয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় পাঁচ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাশাপাশি গাছগাছালি উপড়ে পড়ে যাওয়ায় লোকালয়ের বৃক্ষ সহ পশ্চিম সুন্দরবনের বৃক্ষরাজির ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে এখনও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলছে।
এদিকে রেমালের রেশ কাটতেই সাইকোন শেল্টার গুলি থেকে আশ্রয় নেওয়া মানুষ গুলো নিজ নিজ বাড়ী ফিরেছে ও ফিরতে শুরু করেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে প্রকাশ রেমালের কারণে উপজেলায় দুর্গত মানুষের সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৬শত বিরাশি জন। উপজেলায় ৫শত এক চল্লিশটি ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ ৯৩টি কাঁচা ঘরবাড়ি ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ৪শত ৪৮টি কাঁচা ঘরবাড়ি। সাইকোন শেল্টারে যাওয়ার সময় গাবুরার নাপিতখালী গ্রামে শওকত মোড়ল(৬৫) নামে এক ব্যক্তি স্ট্রোক জনিত কারণে মারা যান। এছাড়া হতাহতের কোন খবর নাই।ইতিমধ্যে দুর্গত মানুষের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারীভাবে চাল,ডাল, তেল ও শুকনা খাদ্য সহায়তা করা হয়েছে।

 সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার তুষার মজুমদার বলেন উপজেলায় ২শত হেক্টর চিংড়ী ঘের প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে পানিতে তলিয়ে গেছে। ডুবে যাওয়া চিংড়ী ঘেরের সংখ্যা ৫শত। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে প্রকাশ কৃষকদের কৃষি ফসলের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বৃষ্টি জনিত কারণে। তবে উপজেলায় পাউবোর বাঁধ ভাঙেনি কোন ইউনিয়নে। কয়েকটি স্থানে রিং বাঁধ উপচিয়ে ভিতরে পানি প্রবেশ করেছে। বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম বলেন নদীতে প্রচন্ড ঢেউয়ের কারণে বেশ কিছু বেড়ী বাঁধ ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে।

এদিকে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরারেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে রেমাল তান্ডব চালায় সুন্দরবনে। ফলে সুন্দরবনের বৃক্ষ কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুধু সুন্দরবন নয় লোকালয়েও গাছাপালার ক্ষতি হয়েছে। বনবিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয় কোন বন্য প্রাণি মারা যায়নি। তবে জলচ্ছ্বাসে ভেসে আসা তিনটি হরিণকে কলাগাছিয়া বন টহল ফাড়িতে অবমুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন বনের মধ্যে ৮টি টহল ফাড়ির পল্টন নষ্ট হয়েছে। বনের মধ্যে বন্য প্রাণির খাওয়ার জন্য খননকৃত মিষ্টি পানির ১৬টি পুকুর ডুবে গেছে। তিনি বলেন সাগর সংলগ্ন টহল ফাড়ি বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে ক্ষয় ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলছে বলে জানান।
 শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিবুল আলম বলেন ঘূর্ণিঝড় রেমালে ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে। লবন পানির চিংড়ি চাষ এলাকা সেকারণে ৫শত চিংড়ী ঘের ডুবে গেছে।
ছবি- শ্যামনগর উপজেলায় গাবুরায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্থ ঘরবাড়ি।




প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024