|
Date: 2024-06-10 09:08:38 |
নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যখন ভারত-পাকিস্তান মহারণ চলছে, মাইল পাঁচেক দূরত্বের ক্যান্টিয়াগ পার্কে তখন অনুশীলন করছে বাংলাদেশ দল। নাসাউ কাউন্টি পরিচালিত এই পার্কটি খেলাধুলার স্বর্গরাজ্য বলা যায়।
পাঁচটি টেনিস কোর্ট, বেসবল টার্ফ, সফটবল মাঠ, কয়েকটি বাস্কেটবল কোর্ট, ছয়টি হ্যান্ডবল ও প্যাডলবল কোর্ট, বেসবল ও সফটবেল কেইজ, বিভিন্ন মাল্টিপারপাজ টার্ফ, গলফ কোর্স, সুইমিং ও ডাইভিং কমপ্লেক্স, আইস স্কেটিং রিঙ্ক, উন্মুক্ত আরও কিছু মাঠ… কী নেই এখানে! বিশাল এই আঙিনার এক কোনায় জায়গা পেয়েছে ক্রিকেটও।
মূলত বিশ্বকাপ দলগুলির জন্যই নেট অনুশীলনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এখানে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়াইয়ের আগে রোববার এখানেই ছিল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন সেশন।
ম্যাচের আগের দিন এমনিতে মূল ভেন্যুতে অনুশীলন করতে চায় সব দলই। তবে নিউ ইয়র্কের ম্যাচের জন্য ক্যান্টিয়াগপার্কে অনুশীলনেও আপত্তির কারণ নেই খুব একটা। এই দুই জায়গার উইকেটের জন্ম যে একই সঙ্গে। অ্যাডিলেডে যে ১০টি ড্রপ-ইন পিচ তৈরির পর জাহাজে করে ফ্লোরিডায়এনে সেখানকার উষ্ণ রোদ-বাতাসে পরিচর্যা করে শেষ পর্যন্ত ট্রেইলারে করে নিউ ইয়র্কে নিয়ে আসা হয়েছে, সেই পিচগুলির চারটি বসানো হয়েছে নাসাউ কাউন্টি মাঠে, বাকি ছয়টি এই ক্যান্টিয়াগের অনুশীলন প্রাঙ্গনে। সব উইকেটের চরিত্র তাই একই রকম হওয়ার কথা।
উইকেট নিয়ে এত কথা বলার কারণ, এখনও পর্যন্ত এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় তো নিউ ইয়র্কের উইকেটই। অসম বাউন্সের বিপজ্জনক এই উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য হয়ে উঠেছে মৃত্যুকূপ। এই মাঠে আসরের প্রথম দুই ম্যাচে আগে ব্যাট করা দল গুটিয়ে গেছে ৭৭ ও ৯৬ রানে। পরের তিন ম্যাচেও কোনো দল এখনও পর্যন্ত ১৪০ করতে পারেনি। কানাডার ১৩৭ রানই এখানকার সর্বোচ্চ। সেই স্কোর নিয়েই তারা হারিয়ে দেয় আয়ারল্যান্ডকে। রোববার যেমন ১১৯ রান নিয়ে ভারত হারায় পাকিস্তানকে। নেদারল্যান্ডসের ১০৩ রান টপকাতে ঘাম ছুটে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার।
এখানেই সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচের আগে যথারীতি উইকেট ঘিরে চলছে নানা আলোচনা, কৌতূহল, প্রশ্ন।বাংলাদেশ দল অবশ্য বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছে। সবচেয়ে বড় কারণ, অবশ্যই প্রথম ম্যাচের জয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হারসহ সাম্প্রতিক যে দুরাবস্থা ছিল দলের, সেই হতাশার মেঘ কিছুটা হলেও দূর করে নতুন আশার ঝিলিক হয়ে এসেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়। ডালাসে ওই ম্যাচ হেরে গেলে দলের মনোবল ধ্বংস হয়ে যেত হয়তো পুরোপুরি। কিন্তু সেই ম্যাচেজয়ের পর দল যে দারুণ চাঙা, তা ফুটে উঠল রোববার সংবাদ সম্মেলনে কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের কথায়।
আমার মনে হয়, এই ফলাফলে ওরা স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। একটি ম্যাচ খেলে কাঙ্ক্ষিত দুটি পয়েন্ট ওরা পেয়েছে। আমাদের জন্য অনেক বড় ম্যাচ ছিল এটি। ম্যাচের আগের সময়টায় প্রচণ্ড চাপ ছিল। তবে ছেলেদের প্রস্তুতি ভালো ছিল। ওরা ফল পেয়েছে।
ফুরেফুরে থাকার আরেকটি কারণ হতে পারে উইকেটও। যে উইকেট এত ভয়ানক, সেখানে মিশে আছে তো বাংলাদেশের সম্ভাবনাও! উইকেটের কারণেই ম্যাচটি হয়ে উঠছে লটারির মতো।
© Deshchitro 2024