দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলায় আশরাফুল নামে এক ইজি বইক চালককে গলা কেটে অটো ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া দুষ্কৃতীকারি চক্রের এক সদস্যসহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ৪ জুন রাত ১০টায় চিরিরবন্দর উপজেলার ৩নং ফতেজংপুর ইউনিয়নের ঠাকুরের হাট এর উওরে জোতরঘু গ্রামের ফাঁকা রাস্তায় এ ঘটনাটি ঘটে।
ইজি বইক চালক আশরাফুল(২২) ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় এবং বর্তমানে সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর মিস্ত্রিপাড়া এলাকার মোঃ হায়দার আলীর ছেলে।
এ ঘটনার পরপরেই অটো চালক আশরাফুলের বাবা বাদী হয়ে চিরিরবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমদ এর সরাসরি দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ জিন্নাহ আল মামুন এর প্রত্যক্ষ তদারকিতে অভিযানে নামে চিরিরবন্দর থানার পুলিশ । তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সনাক্তপূর্বক গ্রেপ্তার করতে নীলফামারী জেলাসহ আশেপাশের উপজেলায় অভিযান চালিয় গত ২০জুন নীলফামারী ,ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিন জোড়াবাড়ি গ্রামের রেলস্টশন সংলগ্ন হাসানুর রহমান নামে জনৈক এক ব্যক্তির বাসা থেকে মোঃ মোকসেদুল মোমিন (২৩)কে আটক করা হয় ।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকাসহ তার সহোযোগী অপর আসামীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। তার দেয়া তথ্য মতেই ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকের ব্যাটারি সহ দিনাজপুর চাউলিয়াপট্রি থেকে ভাংগারী ব্যবসায়ী জামাতের ইসলাম ও চোরাই মাল ক্রয়কারী মোঃ রাজনকে গ্রেফতার করা হয় । মুল ঘটনার সাথে জড়িত অপর দুই আসামি আলামিন ও বাবু পলাতক রয়েছে।
শুক্রবার সকালে দিনাজপুর সদর সার্কেল অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( সদর সার্কেল)শেখ জিন্নাহ আল মামুন।এসময় তিনি বলেন আসামী মোকছদুল
মোমিন সহ তার সহযোগীরা সৈয়দপুর থেকে রিজার্ভ ভাড়া করে চিরিরবন্দর উপজেলার ৩নং ফতেজংপুর ইউনিয়নের ঠাকুরের হাট এলাকার জোতরঘু গ্রামের নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে অটোচালক আশরাফুলের প্রথমে দড়ি দিয়ে হাত পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করে অটোচালক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।এক পর্যায়ে অটোচালক প্রতিহত করার চেষ্টা করলে দুষ্কৃতীকারিরা ধারালো চাকু দিয়ে অটোচালককে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা কেটে শ্বাসনালিতে আঙ্গুল ঢুকিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে অটো নিয়ে পালিয়ে যায় ।পরবর্তীতে অটোচালককে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে সৈয়দপুর ১০০শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করে ।পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অটোচালক আশরাফুলকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় ।বর্তমানে সে আশংকামুক্ত রয়েছে।এ ঘটনার পরপরেই অভিযানে নেমে প্রথমে মোকছদুল
মোমিনকে বোমার থেকে আটক করা হয় । জবানবন্দিতে সে বলে সেসব অপর দুই আসামী আলামিন ও বাবু ইজিবাইকের ৫টি ব্যাটারি ৩৮হাজার বিক্রি করে দিয়ে টাকা ভাগাভাগি করে নেয় ।এবং তার দেয়া তথ্য মতেই দিনাজপুর চাউলিয়াপট্রি থেকে চোরাই মাল ক্রয়ের সাথে সম্পৃক্ত মোঃ রাজনকে ও ভাংগারী ব্যবসায়ী জামাতুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয় ।এবং তাদের দেয়া তথ্য মতে মহারাজা মোড়ে গুলজার নামক এক ব্যাটারি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫টি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয় ।অতিরিক্ত পুলিশ জিন্নাহ আল মামুন আরো বলেন যে আসামীরা প্রত্যেকেই পূর্ব থেকে পরস্পরের পরিচিত এবং ঘটনার সাথে জড়িত অপর দুই আসামিকেও খুব দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
ধৃত আসামীদের কাছ থেকে স্টার ডয়োডো ব্যাটারি চালিত ইজি বাইক, ৫টি লাল কালারের ব্যাটারি,একটি ধারালো রক্ত মাখা চাকু,একটি রক্ত মাখা নাইলনের দড়ি,
চালকের এক জোড়া বারমিজ জুতা ও রক্ত মাখা কাপড়।
ধৃত আসামীরা হলেন সৈয়দ পুর মিস্ত্রি পাড়া এলাকার মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মোকছদুল মোমিন(২৩),
দিনাজপুর বিরল উপজেলার দোগাছি গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে মোঃ জামাতুল ইসলাম(২৮) এবং দিনাজপুর সদরের পশ্চিম মিশন রোড এলাকার মৃত মঈন খানের ছেলে মোঃ রাজন(।৪২)
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চিরিরবন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ জাকির হোসেন,এস আই মোঃ রনি ও এস আই সুরত চন্দ্র রায় ।