সকাল ৮ টা,গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এবং মানুষের পদচারণায় ব্যস্ত হয়ে উঠতে শুরু করেছে উখিয়ার পালংখালী বাজার। বাজারের সিএনজি স্ট্যান্ডে বোরকা পরিহিত অজ্ঞাত নারী থেকে জোরপূর্বক কিছু একটা ছিনিয়ে নিচ্ছে এক যুবক। সিসিটিভি ফুটেজে এমন চিত্র দেখা গেছে। 


ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ছিনিয়ে নেওয়া কালো সাদৃশ্য বস্তুটি একটি প্যাকেট, স্থানীয়দের ভাষ্য ওই প্যাকেটটি ইয়াবার।


শুক্রবার (২১ জুন) এই ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 


নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্থানীয় সিএনজি চালক জানান, " ছাতাসহ অপেক্ষারত এক নারীর সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায় কিছু যুবক। ওই সময় নারীটির কাছে থাকা ইয়াবা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি।"


স্থানীয় সূত্রে এই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে মাদক সহ ডজন খানেক মামলার আসামী পালংখালীর ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত মাহবুবর রহমানের পুত্র শাহাব উদ্দিন (৩৫) প্রকাশ সোনা মিয়া ও তার মামা একই এলাকার মৃত আব্দু সোয়ানের পুত্র রুস্তম আলী (৩৬) প্রকাশ মাছ রুস্তমের নাম এসেছে।  


ভিডিওতে দেখা যাওয়া সবুজ শার্ট পরিহিত যুবকের নাম পরিচয় নিশ্চিত করা না গেলেও অনেকেই বলছেন ওই যুবক পেশায় টমটম চালক।


সূত্র বলছে, ৯নং ওয়ার্ডের সীমান্তঘেষা আনজুমান পাড়ার আনিব প্রকাশ হানিবার পুত্র 

আব্দুল আহাত (২৫) নামের এক টমটম চালক এঘটনায় জড়িত। তবে আহাত ভিডিওতে থাকা যুবক কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


এছাড়াও অজ্ঞাত নারীটি রোহিঙ্গা এবং পালংখালীর পার্শ্ববর্তী একটি ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে এসে ৭০ হাজার ইয়াবা ক্রেতার কাছে সরবরাহ করছিলো বলে জানা গেছে।


জড়িতদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের খোঁজ মেলেনি। তবে সোনামিয়ার ভাই যুবলীগ নেতা সোহরাব উদ্দিন ভুলুর সাথে মুঠোফোনে কথা হয় প্রতিবেদকের। 


ভুলু জানান, " ইয়াবা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমার ভাই জড়িত বলে আলোচনা হচ্ছে তবে বিষয়টি কতটুকু সত্য আমি জানিনা কারণ গত তিনদিন ধরে আমি আমার বোনের বাসায় অবস্থান করছি।"


এদিকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, " ইয়াবা ছিনিয়ে নেওয়ার ভিডিওটি আমার পরিষদের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। প্রশাসন চেয়েছে এবং পরিষদের ভিডিওটি সরবরাহ করা হয়েছে।"


এধরনের ঘটনা উদ্বেগের জানিয়ে গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, " আশাকরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবে।"


বিষয়টি আলোচনায় আসার পর থেকে তৎপরতা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শনিবার বিকেলে পালংখালীর বেশ কিছু স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। 


ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসাইন বলেন, "মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। ইয়াবা ছিনতাইয়ের তথ্য পাওয়ার পর থেকে আমরা জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।"


মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প অধ্যুষিত হওয়ায় পালংখালীতে ইয়াবা ছিনতাই, পাচার সহ প্রতিনিয়তই বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা ঘটছে।


এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টদের কঠোর পদক্ষেপের বিকল্প নেই অভিমত স্থানীয় বাসিন্দাদের।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024