সততা, কর্মদক্ষতা ও ন্যায়পরায়নতা দেখিয়ে স্বল্প সময়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন সরকারি দুজন কর্মকর্তা। তারা হলেন, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামান আল ইমরান ও অপরজন থানা অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন। তাদের সততা ও কর্মদক্ষতা মুগ্ধ করেছে এ অঞ্চলের মানুষকে। 


সরকারি অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে জনগণের রয়েছে অনেক অভিযোগ। এরই মধ্যে ব্যতিক্রমী জনবান্ধব, পরিশ্রমী জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. আফতাবুজ্জামান আল ইমরান ও ওসি আনোয়ার হোসেন। 


গত ২০২৩ সালে ডিসেম্বর ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান আফতাবুজ্জামান আল ইমরান। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মাত্র আট মাসেই তার সততা ও কর্মদক্ষতায় পাল্টে গেছে উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সার্বিক চিত্র। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরের কর্মকাণ্ডে ফিরে এসেছে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা। কমেছে জনভোগান্তি আর বৃদ্ধি পেয়েছে সেবার মান।

উপজেলাকে একটি উন্নত আধুনিক জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরালসভাবে কাজ করছেন তিনি। জনবান্ধব এই উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপজেলার রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও সমাজের বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ। 


এছাড়াও উপজেলায় ঘটে যাওয়া যেকোনো অবৈধ ও অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার। তিনি কোনো অভিযোগ পেলে তার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেন। গণমাধ্যম, ফেসবুক, মুঠোফোনের মাধ্যমে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগ দ্রুত সমাধান ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য জমকালো অলিম্পিয়াড আয়োজন, গণিত, বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, বাংলা বানান প্রতিযোগিতা এবং Spelling Bee Competition. উপজেলার সকল স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান। 

এছাড়া সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সেবা, জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং একের পর এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুবসমাজকে মাদক ও জুয়া সহ সকল প্রকার অবৈধ কাজ থেকে দূরে থাকতে ফেসবুকের মাধ্যমে সচেতনতামূলক পোস্ট, সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বা সরকারি দান-অনুদান সরেজমিন পরিদর্শন করে তা শতভাগ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।


অপরদিকে একইভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছেন  ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন। থানায় যোগদান করেই দালাল মুক্ত করার মিশন নিয়ে সফল হয়েছেন। সেবা গ্রহীতার জন্য দরজা উম্মুক্ত করে সৃষ্টি করেন নতুন অধ্যায়।


পুলিশ জনগণের বন্ধু। জনগণের জানমালের হেফাজতের দায়িত্ব পুলিশের। প্রায় ১ বছর পূর্বে তিনি বৃহত্তর রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল থানায় যোগদান করেন। 

যোগদানের পর সৎ ও নিষ্ঠাবান এই কর্মকর্তা নিজের সততা, সাহসিকতা, উদারতা দিয়ে থানাবাসীর মনজয় করার চেষ্টা চালান আন্তরিকতা ও সাহসিকতার সঙ্গে। এতে তিনি সফলও হয়েছেন কুড়িয়েছেন বিভিন্ন মহলে প্রশংসা। তার এমন সততা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জল করে তুলেছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করার পাশাপাশি থানার দরজা সকল বিপদগ্রস্থ মানুষের জন্য উন্মুক্ত রেখেছেন ওসি আনোয়ার হোসেন।


বর্তমানে থানায় সেবা নিতে আসা লোকজন টাকা ছাড়াই সাধারণ ডায়রী, অভিযোগ ও মামলা অন্তর্ভূক্ত করতে পারছেন থানায়। সর্বস্তরের মানুষের মুখে মুখে তার প্রসংশা। বর্তমানে সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক এবং অপরাধীর কাছে হয়ে উঠেছেন আতঙ্ক। 


উপজেলার এই দুজন কর্মকর্তা সম্পর্কে ক্ষেতলাল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র খলিলুর রহমান কাজী ও বড়তারা ইউপি সদস্য রুহুল আমিনসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, আমাদের বর্তমান ইউএনও ও ওসি স্যার খুবই সৎ মানুষ। আমরা খুব সহজে তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা ও কথা বলে কাজ করে নিতে পারি। কোন মাধ্যম লাগেনা। আর তাছাড়া অনেকের থেকে শুনেছি এবং নিজেরাও কাজ নিয়ে গিয়ে দেখেছি কোন প্রকার টাকা লাগে না। টাকা ছাড়া যে বর্তমানে সময়েও কাজ করে পাওয়া যায় তার জলন্ত উদাহরণ এই দুজন অফিসার। আমরা সাধারণ মানুষরা চাই একজন ইউএনও ও ওসির একটি উপজেলায় চাকুরীর যে পূর্ণ সময় সেই সময় পর্যন্ত তাদের এখানে রাখা হোক এটা আমাদের দাবি।


উপজেলার এই দুজন কর্মকর্তা সম্পর্কে সাংবাদিক এস.এম মিলন ও ওয়াকিল আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশে সৎ কর্মকর্তার সংখ্যা খুবই কম। মানুষ চলে যায় কিন্তুু তার স্মৃতি রয়ে যায়। চাকুরীজনিত কারণে এ দু'জনও একদিন বদলী হয়ে যাবে এটাই বাস্তবতা। তবে চলে গেলে আমরা ক্ষেতলালবাসি খুব মিস করবো তাদের এটাও সত্যি।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024