দিনাজপুর বীরগঞ্জ উপজেলায় রেজিনা খাতুন নামে ৭৫বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে জবাই করে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মাচনসহ তিন নাতিকে গ্রেপ্তার করেছে বীরগঞ্জ থানা পুলিশ ।
গত ৬জুন রাতে বীরগঞ্জ উপজেলার ১নং শিবরামপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ধনগাঁও পশ্চিম জুম্মার হাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত রেজিয়া বেগম(৭৫) বীরগঞ্জ পশ্চিম জুম্মার হাট এলাকার মোঃ সবদুর মিয়ার স্ত্রী ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন বীরগঞ্জ ধনগাঁও পশ্চিম জুম্মার হাট এলাকার মৃত বাবুল মিয়ার ছেলে মোঃ জাকির হোসেন(২৬) ,একই এলাকার মোঃ রেনু মিয়ার ছেলে হাসিম মিয়া( ৪৩) এবং বীরগঞ্জ দেউলী এলাকার কাজল মিয়ার ছেলে মোঃ রমজান আলী (২৫)। তারা প্রত্যেকেই নিহত রেজিয়ার সম্পর্কে নিজের নাতী।
মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে বৃদ্ধা হত্যার ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমদ । এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন এটা ছিল একটা ক্লুলেস হত্যা কান্ড। গত ৬জুন রাত থেকে ৭জুন সকালের মধ্যে এ ঘটনা ঘটতে পারে।দুষ্কৃতীকারিরা বৃদ্ধাকে জবাই করে হত্যা করে ট্রাংকের তালা ভেঙে গরু ও গম বিক্রয়ের নগদ ১লক্ষ ৪৭হাজার টাকা,স্বরনালংকার ও দলিলাদি লুট করে নিয়ে যায় ।
সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে চুরি যাওয়া নগদ অর্থ,স্বর্ণালঙ্কারের সাথে দলিল চুরি যাওয়ায় আমাদের সন্দেহের বীজ বাসা বাঁধে যে সম্পদকে ঘিরেই এই হত্যা কান্ড ঘটতে পারে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( সদর সার্কেল)শেখ জিন্নাহ আল মামুনের তদারকিতে,বীরগঞ্জের অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত নিহত রেজিনা বেগমের দেবর আব্দুলের ছেলের ঘড়ের নাতি জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার দেওয়া তথ্য মতে নিহতের দেবর রেনু মিয়ার ছেলে অপর আসামী হাসিম মিয়া ও মেয়ের ঘড়ের নাতী মোঃ রমজান আলীকে গ্রেপ্তার করা হয় । পুলিশ সুপার আরো বলেন যে আসামীরা যোগসাজস করে সম্পদের লোভে দাদীর ঘরে ঢুকে ট্রাংকের তালা ভেঙে জিনিষপত্র লুট করে নিয়ে যাবার সময় দাদী টের পেয়ে নাম ধরে ডকে এবং বাঁধা প্রদান করলে সেখানে থাকা দা দিয়ে প্রথমে দাদীর মাথায় আঘাত করে পরে গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে দলিলাদি, টাকা ,স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায় । এ ঘটনার পর নিহত রেজিয়ার ছেলে মোঃ সুদূর মিয়া বাদী হয়ে বীরগঞ্জ থানায় এজাহার দাখিল করেন।মামলা দায়েরের পরপরেই অভিযানে নেমে পুলিশ ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন সহ আসামী ধরতে সক্ষম হয়।
দলিল এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার হলেও টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার না হওয়ায় আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে জানান পুলিশ শাহ ইফতেখার আহমেদ ।সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোমিনুল করিম,বীর থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান এবং জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি)সোহেল রানাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।