|
Date: 2024-07-02 11:30:29 |
সর্বজনীন পেনশন 'প্রত্যয় স্কিম' বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে দেশের ১ জুলাই থেকে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাস, পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম এই বিষয়টি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ (ঘ) এর সামাজিক নিরাপত্তার অধিকারের সাথে সম্পৃক্ত। প্রথমেই স্বীকার করে নিতে হয় অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা, সম্মানী, সুযোগ-সুবিধা তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু গতবছর সর্বজনীন পেনশন যখন চালু করা হলো তখন বিভিন্ন স্তরের মানুষদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয় নি। সর্বশেষ এই স্কিমটি যখন তাদের স্বার্থের বিপরীতে নিজেদের উপর এসে পড়েছে তখন তারা আন্দোলন ও বিরোধিতা শুরু করে দিলো। এতোদিন যে সাধারনের জন্য ছিলো তখন তারা ভ্রুক্ষেপহীন থেকেছেন। উল্লেখ্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম "প্রত্যয়" ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে।
বর্তমানে একজন পাবলিক বিশ্ববিদালয়ের প্রফেসর যখন অবসরে যায় ৬৫ বছর বয়সে তার সর্বশেষ মূল বেতন (৭৮০০০ টাকা) অনুযায়ী সে এককালীন ৮০,৭৩,০০০ টাকা পাবে এবং প্রতি মাসে ৩৯,৩৫৫ টাকা আজীবন সে বা তার নমিনী পাবে। সেই মাসিক পেনশন পাবে ৫% রেটে প্রতি বছর বাড়বে। অন্যদিকে নতুন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’ থেকে তুলনামূলক কম সুযোগ-সুবিধা পাবেন তারা।
আজ আমার আলোচ্য বিষয় অন্যটি। বলা হয়ে থাকে শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণীই একটি জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু হায় আমার দেশের বুদ্ধিজীবীদের অবস্থা! যখন একটা দেশের বুদ্ধিজীবীরা কেবল নিজের স্বার্থে মুখ খোলে তখন সে দেশে আর বিবেক থাকে না।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য শিক্ষার্থীর আন্দোলন চলমান,তাদের দাবি কোঠার পরিবর্তে মেধার ভিত্তিতে যাচাই করা হোক। তাছাড়া গন রুমগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের ভয়াবহ নির্যাতনের খবর প্রতিনিয়ত দৈনিক গুলোর শিরোনাম হচ্ছে। এইসব যৌক্তিক বিষয়ে তাদের বর্তমান সর্বজনীন পেনশন স্কিম 'প্রত্যয়' বাতিলের মতো সোচ্চার হতে দেখা যায় না। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের উপর নানাবিধ চাপ প্রয়োগ করতে দেখা যায়। যার মাধ্যমে তারা নেক্কারজনক কাজ করে যাচ্ছে। ফলে তাদের বর্তমান যৌক্তিক আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংহতি প্রকাশ করছে না।
এবার আন্দোলন প্রসঙ্গ, আন্দোলন হবে ভালো কথা, আন্দোলন হওয়া উচিত ছিলো সর্বজনীন পেনশন বাতিল চেয়ে তার বিরুদ্ধে যেন সকল স্তর এর থেকে লাভবান হয় কিন্তু তারা তা না করে তারা সেই তাদের স্বার্থের বিপরীত স্কিম বাতিলের আন্দোলনে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
তারই ফলশ্রুতিতে বলতে বাধ্য হচ্ছি শিক্ষক সমাজ আজ অনেকটাই নৈতিক অবস্থান হারিয়ে ফেলেছে। বিভিন্ন বিষয়ে নতজানু থাকার ফলে আজ তাদের এই মেরুদন্ড সোজা করে আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থী সমাজের পাশাপাশি দেশের মানুষ অনেকটা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
লেখক: মোঃ নাজমুল হাসান: শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
Email: pressnazmulbd@gmail.com
© Deshchitro 2024