কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে একের পর এক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। ৪ টি পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় ৪ জনের মৃ'ত্যু হয়েছে। সর্বশেষ কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকত পাড়া এলাকা থেকে এক স্কুল ছাত্রীর ম'র'দে'হ উদ্ধার করা হয়েছে। সকালে শহরের ৬ এবং ৭ নং ওয়ার্ডে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় দুইজন মৃ'ত্যু এবং ঝিলংজায় এক জনের মৃ'ত্যুর ১৪ ঘন্টার ব্যবধানে এই ঘটনা ঘটে। 


বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাতে প্রায় তিন ঘন্টার উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে মিম নামের স্কুল ছাত্রীর ম'র'দেহ উদ্ধার করে। মিম সৈকত পাড়ার সেলিমের কন্যা। সে সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। 


কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার দোলন আচার্য বলেন, পাহাড় ধসের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে লামিয়া নামের একজনকে জীবিত উদ্ধার করেছি। মিম নামের আরেকজনকে প্রায় তিন ঘন্টার উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে মৃ'ত উদ্ধার করা হয়েছে। 


উত্তর কলাতলী আদর্শ সমাজ কমিটির সভাপতি নুরুল হুদা বলেন, স্থানীয় লোকজন খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়ে স্থানীয়রা আগে থেকে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে যোগ দেয়। প্রায় আড়াই ঘন্টা উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে মিমকে মৃত উদ্ধার করা হয়েছে। 


এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে কক্সবাজারের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরিপাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে এক গৃহবধূর মৃ'ত্যু হয়েছে।


নিহত গৃহবধূর নাম লায়লা বেগম (৩৫)। তিনি বজল আহমদের স্ত্রী। তাদের ২ বছরের শিশু মোহাম্মদ জুনায়েদ গুরুতর আহত হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 


নিহত গৃহবধূর মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার বলেন, আমার মা ভাইকে নিয়ে দুপুরে ভাত খাচ্ছিলো এসময় হঠাৎ পাহাড় এসে রান্নাঘরে পড়ে। এঘটনায় আমার মা এবং ভাইকে মাটির ভেতর থেকে বের করা হয় এলাকাবাসীর সহায়তায়। পরে আমার মায়ের মৃ'ত্যু হয়েছে। আমার ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


তারও আগে সকাল ৭টার দিকে পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু হয়। শহরের ০৬ নং ওয়ার্ডের পূর্ব পল্যান কাটা এলাকায় বসতঘরে পাহাড় ধসে স্থানীয় মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা বেগম (৩০) নিহত হয়েছেন৷ এছাড়া শহরের ০৭ নং ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃ'ত্যু হয় সাইফুলের ছেলে মো: হাসানের (১০)। 


নিহত জমিলার স্বামী করিম জানান, সকাল ৬টার দিকে ঘুম থেকে উঠেই নাস্তা খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সপরিবারে। এসময় আচমকা পাহাড়ের কাদা মাটি বসত ঘরে পড়লে চাপা পড়ে গৃহবধূ জমিলা। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।


নিহত শিশু হাসানের পরিবার জানায়, পাহাড় ধসে ঘরের মাটির দেওয়ালে পড়লে মাটির দেওয়াল সহ আসবাবপত্র পড়ে নিহত শিশু হাসানের গায়ে। ঘটনাস্থল থেকে তাকে মৃত উদ্ধার করে স্থানীয়রা।


এদিকে কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম তারিকুল আলম বলেন, কক্সবাজার পৌরসভা ১৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে। তাদের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের পাহাড়ে বসবাসরতদের মাইকিং করে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না। একারণে মৃ'ত্যুর মতো এমন ঘটনা ঘটছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে তারা নিরাপদে আছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024