জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার শিমুলতলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থীর এইচএসসি (বিএম শাখা) পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। রোববার (৬ নভেম্বর) দুপুর দুইটা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার অনুষ্ঠানের ২০ ঘণ্টা আগেও ওইসব পরীক্ষার্থী জানতে পারছেন না তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারবেন কি-না। 

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক মোরশেদা আক্তার ফরম ফিলাপের নামে তাঁদের কাছে মাথাপিছু ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা হারে জমা নেন। কিন্তু টাকা কলেজ কর্তৃপক্ষকে জমা না দেওয়ায় তাঁদের ফরম ফিলাপ হয়নি। ফলে পরীক্ষাকেন্দ্রে তাঁদের প্রবেশপত্র কলেজে আসেনি। এতে তাঁদের পরীক্ষা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলায় কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক মোরশেদা আক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পরীক্ষাবঞ্চিতরা। তবে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দাবি, ভুক্তভোগীদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে কলেজ অধ্যক্ষকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে।'

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নস্থ শিমুলতলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে ফারাজিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজকেন্দ্রে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসায় প্রবেশপত্রের জন্য পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার এক সপ্তাহ আগে থেকে কলেজে গেলে অন্যান্য শিক্ষকেরা তাদের ফরম বিলাপ করা হয়নি বলে জানিয়ে দেন। এতে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক মোরশেদা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। অভিযুক্ত মোরশেদা আক্তার আত্মগোপনে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমি কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক মোরশেদা আক্তার ম্যাডামকে ফরম ফিলাপের জন্য ৪ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু তিনি টাকা আত্মসাৎ করায় আমার ফরম ফিলাপ করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ।'

ইসমা আক্তার বলেন, 'আমি মোরশেদা আক্তার ম্যাডাম গত শুক্রবার আমার কাছে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশপত্রের জন্য ১ হাজার টাকা নিয়েছে। এর আগে ফরম ফিলাপের জন্য ৪ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু তিনি আমার ফরম করেননি।

এছাড়া রোমা আক্তার, সাকিব, রাজিয়া, আবু বক্কর, মেহেদী হাসানসহ অনেকেই বলেন, 'মোরশেদা ম্যাডাম অন্তত ৬০ জনের কাছে ফরম ফিলাপের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে এখন আত্মগোপনে রয়েছে।

শনিবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীরা তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত ভেবে প্রতিকারের আশায় ছুটে যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে। ইউএনওকে না পেয়ে পরীক্ষার্থীরা ইসলামপুর থানায় বিষয়টি অবগত করেন।

 এ ব্যাপারে শিমুলতলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ না থাকায় তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি'

অভিযুক্ত কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক মোরশেদা আক্তার আত্মগোপনে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কলেজের অফিস সহকারী ফিরোজ আহমেদ বলেন 'এবার ১২৪ জন পরীক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দিয়েছি। ফরম ফিলাপ না হওয়ায় এখন পর্যন্ত ১৪ জন পরীক্ষার্থী আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মু. তানভীর হাসান রুমান বলেন, 'শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী বিষয় আমাকে জানিয়েছে। আমি দ্রুত ওই কলেজ অধ্যক্ষকে ঢাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। দেখা যাক কী করা যায়।'


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023