|
Date: 2024-08-29 00:10:38 |
মোঃ আজগার আলী, সদর উপজেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:
২০১৬ সালের ৯ জুলাই দিবাগত রাত দুইটার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওলিউল্লাহকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার, এসএম আতাউল হক দোলন, সাতক্ষীরার সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের তৎকালিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহউদ্দিনসহ ৩৫ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী ছালিমা খাতুন বাদি হয়ে মঙ্গলবার আমলী আদালত-২ এ ওই মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন কুমার বিশ্বাস বাদির লিখিত অভিযোগটি সিআর মামলা হিসেবে আমলে নিয়ে (১৫৬(৩)/১৫৭ ধারা তৎসহ গঠিত পুলিশ রেগুলেশন, বেঙ্গল এর ২৪৫(এ) নং রেগুলেশন অনুযায়ি অগ্রসর হওয়ার জন্য শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
মামলায় অন্যতম আসামীরা হলেন কাশিমাড়ি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আনিছুজ্জামান আনিছ, গাবুরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল আযম লেনিন, শ্যামনগর সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এড. জহুরুল হায়দার বাবু।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নগর গ্রামের একরামুল হক এর ছেলে কৃষক ওলিউল্লাহকে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ, নেতাসহ তৎকালিন জেলা পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহ্উদ্দিন হত্যার পরিকল্পনা করে। এর আংশ হিসেবে ২০১৬ সালের ৮ জুলাই তৎকালিন সংসদ সদস্য জগলুল হায়দার, সাবেক সংসদ সদস্য আতাউল হক দোলন, শফিউল আযম লেনিন, জহুরুল হায়দার বাবুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা গাজী আনিছুজ্জামান আনিছের বাড়িতে গোপন বৈঠক করে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে ৯ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে নিজ বাড়িতে পারিবারিক ঝামেলা সংক্রান্ত একটি শালিসি বৈঠক চলাকালিন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহ্উদ্দিনের নির্দেশে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে ওলিউল্লাহকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৯ জুলাই দিবাগত রাত দুইটার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কাশিমাড়ি গ্রামের মশিউর রহমান ও মঈনুর হোসেনের বাড়ির সামনে রাস্তা থেকে ওলিউল্লার মাথায় গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ ও ক্ষতাসীন দলের নেতারা এটাকে বন্দুকযুদ্ধ বলে প্রচার দেয়। পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে ১০ জুলাই বিকেলে ওলিউল্লাহর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই নামাজে জানাজা শেষে ওলিউল্লার লাশ পারিবারিক কবরস্থারে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ভিকটিম ওলিউল্লাহকে প্রধান আসামী করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করে শ্যামনগর থানায়।
ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তণ হওয়ায় মামলার বিলম্বের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ ইফতেখার আলী ১০ জন পুলিশ সদস্যসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলাটি মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় এফআইআর হিসেবে গণ্য করার নির্দেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
© Deshchitro 2024