|
Date: 2024-08-29 02:54:49 |
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি তিতুমীর কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজেদের টাকায় শিক্ষক ব্যবস্থা করে কোর্স শেষ করছেন বলে জানা যায়। এমন সমস্যার সমাধান চাইলে রাস্তা থেকে চাঁদা তুলে শিক্ষকের ব্যবস্থা করতে বলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মহিউদ্দিন।
গতকাল বুধবার (২৮ আগস্ট) বেলা ১২ টায় তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মহিউদ্দিন এর নিকট মনোবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ডিপার্টমেন্ট সংক্রান্ত সমস্যার সংস্কারমূলক প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। প্রস্তাবনায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সংকট নিরসন ও ব্যবহারিক খাতা নিয়ে বাণিজ্য বন্ধ সহ ১৪ টি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের রাস্তায় চাঁদা তুলে শিক্ষক সমস্যা নিরসন করতে বলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা দৈনিক দেশচিত্র কে জানান, মনোবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক সংকট থাকায় যথাযথ শিক্ষা থেকে আমরা বঞ্চিত হয়ে আসছি। শুরু থেকেই ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক সংকটের কারণে আগ্রহ নিয়ে ক্যাম্পাস যাতায়ত করেও তেমন কোন লাভ হয়নি। আর ৪র্থ বর্ষে ৮টা কোর্সের জন্য ৩জন শিক্ষক কিভাবে ক্লাস নিবেন সেটার সমাধান করতে এসে আবার আগের পন্থায় নিজেদের থেকে টাকা উঠিয়ে গেস্ট টিচার এনে ক্লাস করার জন্য বলা হয়। অথচ নানা সময় নানা ভাবে আমরা নিজ উদ্যোগে শিক্ষক বাড়ানোর দাবি নিয়ে গেলেও কোন লাভ হয়নি। "হচ্ছে" শুনে আস্বস্ত হয়েছি অনেক বার, তবে ২০১৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত তার কোন ফলাফল দেখতে পাইনি।
দেশ সংস্করণ চলছে বলে সকলের মতো আমরাও কিছু দাবি আদায়ের কথা চিন্তা করি। সকল ব্যাচ বসে নানা অনিয়ম নিয়ে আলোচনা করে অবশেষে আজ শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করা হয়। তাঁদের পক্ষে যেসব দাবি পূরণ সম্ভব তারা আশ্বাস দেন যে সমাধান হবে। তবে বিপত্তিটা ঘটে শিক্ষক সংকট নিয়ে। কারণ এটি তাদের হাতে নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় নানা নিয়মের ব্যাড়াজালে সেটা বাস্তবায়নেও লাগবে প্রায় এক বছর যেখানে আমাদের এই বছরেই পরীক্ষায় বসতে হবে সিলেবাস শেষ হোক বা না হোক! এমনকি অনেকগুলো কোর্সের ক্লাস ১দিন ও হয়নি, কারণ শিক্ষক নাই। এমতাবস্থায়, ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকরা ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার এর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, যেহেতু ডিপার্টমেন্টেও বাজেট সংকট। এক এক জন লেকচারার রা একটি কোর্সের জন্য আসতে ১০ হাজার করে দাবি করেন। এখন এমন ভাবে ১ম -৪র্থ বর্ষে ২জন করে শিক্ষক আনতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা প্রয়োজন। ডিপার্টমেন্ট এ ফান্ড কম আর প্রতিবছর এমন ভাবে টাকা তুলে ক্লাস করার কারণে বছরের শেষ সময়ে এসে এই অল্প কিছুদিনের জন্য শিক্ষক এত টাকা দিয়ে এনে ক্লাস করতে চাচ্ছেনা। সাথে সবার কথা সরকারি কলেজে পরেও নিজেদের টাকায় শিক্ষক ব্যবস্থা করে নিতে হবে জানলে হয়ত আসতোও না অনেকে।
এজন্য ভাইস প্রিন্সিপাল স্যারকে বিষয়টা জানানোর পর তিনি বলেন, এটা তো এভাবে সম্ভব নয়। কারণ সরকারি নিয়োগের ব্যবস্থা সময় সাপেক্ষ, এই ডিপার্টমেন্ট হুজুকে ডিপার্টমেন্ট হওয়ায় কোন মতে শুধু খুলে দেয়া হয়েছে।
এই অবস্থায় শিক্ষার্থীরা কি করতে পারেন, এর পরামর্শ চাইলে কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর মো. মহিউদ্দিন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "তাহলে তোমরা রাস্তা থেকে চাঁদা তুলো"
|
অবশেষে শিক্ষার্থীরা বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমরা সকলে চাঁদা তোলা ছাড়া উপায় দেখছি না। সকলের নিকট আবেদন যে যা পারেন চাঁদা দেন যেন আমরা দীর্ঘ ৮ বছরের শিক্ষক সংকট নিরসন করতে পারি অথবা আমাদের রাস্তা বলেন কিভাবে ডিপার্টমেন্ট এ শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরে পেতে পারি। আমরাই যদি ভবিষ্যত হই তবে আমাদের ভবিষ্যৎ কার কাছে গেলে উদ্ধার হবে? শুধু সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া সকলের কাছে।
© Deshchitro 2024