বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলার আসামি আয়াতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ (১০ নভেম্বর) ভোররাতে ফারদিনের বাবা রামপুরা থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় বুশরাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।


এর আগে গতকাল রাত থেকেই বুশরাকে গোয়েন্দা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ বলছে, বুশরা পরশের বান্ধবী।


মামলায় বুশরাকে একমাত্র এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আরও কয়েকজন আসামি রয়েছেন। হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।


বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।


তিনি বলেন, রাত সাড়ে ৩টার দিকে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে বুশরাকে আদালতে পাঠানো হবে।


ওসি বলেন, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত না প্রেমঘটিত কারণে হয়েছে তা মাথায় রেখে তদন্ত চলছে। সে ক্ষেত্রে সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন ফারদিনের বান্ধবী। এ ঘটনায় বুশরা এখনো মুখ খোলেননি।


তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ফারদিন হত্যার বিষয়টি খুব গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে নানামুখী তদন্ত চলছে। রামপুরা, নারায়ণগঞ্জসহ আরও কিছু এলাকার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।


পুলিশ বলছে, ফারদিনের পরিবারের দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যা। তাদের দাবিও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।


গত সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে নৌপুলিশ ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন ৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ৫ নভেম্বর রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে জিডি করেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন। সোমবার লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার দেউলপাড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।


মরদেহের ময়নাতদন্তকারী নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ জানান, ‘ফারদিনের মাথার বিভিন্ন অংশে ও বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। দ্রুতই ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’ ফারদিনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধারকারী নৌপুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তার শরীরে পচন ধরেছিল।


এদিকে মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে ফারদিনের বান্ধবী বুশরাকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগ (ডিবি) হেফাজতে রেখেছিল। এ পর্যন্ত ফারদিনের বান্ধবী, সহপাঠীসহ অন্তত পাঁচজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ডিবি। বুধবার দিনভর ডিবির একটি টিম বুয়েট ক্যাম্পাসে ফারদিনের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলেছে।


অন্যদিকে ফারদিনের পরিবারসূত্রে জানা গেছে, বান্ধবী বুশরার বাবা র‌্যাবের কাছে রয়েছেন। এ ছাড়া বুশরার এক চাচাতো ভাইও র‌্যাবের হেফাজতে রয়েছেন বলে অন্য এক সূত্রে জানা গেছে। র‌্যাবও পরিবার ও সহপাঠীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানা গেছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024