ব্যাংক, এমএফএস ও পিএসপির মধ্যে আন্তঃলেনদেন নিষ্পত্তির সুযোগ দিতে ‘বিনিময়’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফরম করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী রবিবার এ প্ল্যাটফরমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা হচ্ছে।


গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক সার্কুলারের মাধ্যমে বিনিময় প্ল্যাটফরম থেকে লেনদেনের অন্যান্য চার্জ, ফিসহ সার্বিক বিষয় অবহিত করা হয়েছে।


দেশে নগদ লেনদেন কমাতে এমএফএস থেকে এমএফএস বা ব্যাংকের মধ্যে আন্তঃলেনদেন শুরুর বিষয়টি অনেকদিন ধরে ঝুলে আছে। প্রাথমিকভাবে ১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন শুরু হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৮টি ব্যাংক হলো—সোনালী, ব্র্যাক, ইউসিবি, ইস্টার্ন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, পূবালী, আল-আরাফাহ ইসলামী ও মিডল্যান্ড ব্যাংক। তিন এমএফএস প্রতিষ্ঠান হলো—বিকাশ, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের রকেট ও ইসলামী ব্যাংকের এম ক্যাশ। এর বাইরে টালি পে নামে একটি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডর (পিএসপি) যুক্ত হচ্ছে।


সার্কুলারে বলা হয়েছে—ইন্টারঅপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফরম (আইডিটিপি) বিনিময়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ১৩ নভেম্বর। বিনিময়ের মাধ্যমে সম্পাদিত লেনদেনে ফি ও চার্জ নির্ধারণ করা হলো। বিনিময় ব্যবহার করে যেকোনো অঙ্কের প্রতিটি লেনদেনে অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান প্ল্যাটফরমকে ৫০ পয়সা দেবে। ব্যাংক ছাড়া অন্যদের ইন্টারঅপারেবল চার্জ দিতে হবে, যা অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে দেবে। ইন্টারঅপারেবল ফি গ্রাহক থেকে নেওয়া যাবে না।


নির্দেশনার আলোকে বিনিময় প্ল্যাটফরম থেকে ব্যাংক টু ব্যাংক যেকোনো অঙ্কের লেনদেনে গ্রাহক থেকে সর্বোচ্চ ১০ টাকা নেওয়া যাবে। ব্যাংক থেকে পিএসপি ও এমএফএস লেনদেনে গ্রাহক থেকে কোনো চার্জ নেওয়া যাবে না। তবে এমএফএস ও পিএসপির ক্ষেত্রে অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে চার্জ দেবে। আর এমএফএস ও পিএসপি থেকে ব্যাংক লেনদেনে গ্রাহক থেকে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ফি আদায় করা যাবে। এখানে কোনো ইন্টারঅপারেবল চার্জ লাগবে না।


তবে পিএসপি টু পিএসপি ও এমএফএস লেনদেনে গ্রাহক থেকে নেওয়া যাবে সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে ইন্টারঅপারেবল চার্জ হিসেবে অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে দেবে দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে।


বিনিময় ছাড়াও শুধু আন্তঃব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তিতে বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের চারটি প্ল্যাটফরম রয়েছে। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেম (বিএসিপিএস) ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে কোনো চার্জ নেয় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিএসিপিএসের ক্ষেত্রেও ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চেক নিষ্পত্তি হয় ফ্রি। আর ৫০ হাজার টাকার বেশি থেকে ২ লাখ পর্যন্ত প্রতি লেনদেনে ১০ এবং এর বেশি হলে ৪০ টাকা নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।


এ ছাড়া বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফর নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন), ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) ও রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) ব্যবস্থায় লেনদেনে গ্রাহক বা ব্যাংকগুলোকে কোনো চার্জ, ফি বা কমিশন দিতে হয় না।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024