বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) পরিচালক ডা. এইচ এস সাইফুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের আন্দোলনের মুখে রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নিজ কার্যালয়ে এই ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন তিনি।এর আগে শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেন।বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়ে যুক্ত হয়েছিলেন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরাও। এর আগে গতকাল শনিবার দুপুর থেকে কর্মবিরতি পালন করেছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনসহ বিভাগীয় কমিশনার, সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতনরা বৈঠক করেন।আন্দোলনরত শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিক্ষার্থী ও শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নানা কর্মকাণ্ড করে আসছিলেন।তিনি গত ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে শান্তি সমাবেশ করেছেন। এ ছাড়া তিনি দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িত। হাসপাতালের সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, টাকা লুটপাট, সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি করেছেন তিনি।আন্দোলনরত চিকিৎসকরা আরো জানান, হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।সর্বশেষ এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আমরা মনে করি, এই পক্ষপাতমূলক আচরণ নিয়ে তার এখানে দায়িত্ব পালন করার দরকার নেই। এ জন্য পরিচালকের পদত্যাগ দাবি নিয়ে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, এই পদে অতীতে সাধারণত দুই বছর করে দায়িত্ব পালন করেছিলেন শেবাচিমের সাবেক পরিচালকরা। কিন্তু বর্তমান পরিচালক সাইফুল ইসলাম সরকারের তোষামোদি করে তিন বছর ধরে অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছে।এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সচিবদের সঙ্গে তার সখ্য থাকায় পরিচালকের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এমনকি স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর পরিচালক সাইফুল ইসলাম বিভিন্নভাবে আঁতাত করে ও বিতর্কিত অনেক নেতাকে উপঢৌকন দিয়ে এত দিন তিনি বহালতবিয়তে ছিলেন। তাই শেবাচিম হাসপাতালের উন্নয়নের স্বার্থে অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।পরিচালক এইচ এস সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বরিশালের সন্তান আমি। বরিশালের প্রতি, এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার আবেগ আছে। ভালোবাসা আছে। তবে এখন থেকে পরিচালক পদে আমি আর থাকব না।’