শরৎ সেজেছে কাশফুলে

 থরেবিথরে বালুচরে!

 সাদা মেঘের শতদল উরছে

 অপরুপা নিলাম্বরে! "

প্রকৃতি থেকে শরৎ বিদায় নিলেও শরৎ তার সৌন্দর্য্যের চিহ্ন রেখে গেছে প্রকৃতি জুড়ে। নিলাম্বরে যখন সাদা সাদা পেজা তুলার মত উরে বেরায় মেঘ,জনজীবন যখন শীতল স্বস্থির আবহাওয়ার অনুভব করে, আর তখনই ধবধবে সাদা কাশফুল জানান দেয় প্রকৃতিতে শরতের উপস্থিতি। বর্ষার মেঘের ঘনঘটা ঝমঝমিয়ে বৃষ্টিতে মানব জীবন যেন  অতিষ্ট। কালো মেঘ কেটে উঠে আকাশ জুরে ঘুরঘুর করে পেজা সাদা তুলোর মত মেঘ,সাথে প্রকৃতি সেজে উঠে সাদা কাশফুলে।ঐ দূর আকাশের মেঘই যেন নিজ হাতে সাজিয়ে তুলেছে আমাদের প্রিয় ধরণীকে। যার বহিঃপ্রকাশ এই কাশফুল। 

শরতের নাম শুনলেই যে জিনিসটি প্রথম মাথায় আসেসেটা হচ্ছে কাশফুল। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য কাশফুল শুভ্রতা ছড়াচ্ছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে। কাশফুল  হল প্রকৃতির গহনা।সেই গহনায় অপরুপ সৌন্দর্যে সেজে উঠেছে নোবিপ্রবির ১০১ একর।প্রায় সাত হাজার শিক্ষার্থীর প্রানের ক্যাম্পাসটির দীর্ঘকায় জুরে শোভা পাচ্ছে কাশফুল।  বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলো,বঙ্গবন্ধু হলের পাশে,কেন্দ্রীয় মসজিদের পেছনে ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশে কাশফুলের সৌন্দর্যে ছেয়ে গেছে। নীলাকাশের মেঘের নিচে শরতের কাশফুল গুলো যেন মনের অঙিনায় নতুন প্রেমের আলোড়ন তোলে। বিমোহিত হয়ে কবি বলেছেন,

" উচ্চ দোলা পাখির মতো    কাশবনে এক কন্যে_তুলছে কাশ এর ময়ূর চূড়া  কালো খোপার জন্য।"

ষড়ঋতুর বাংলাদেশ, প্রতিটি ঋতুই যেন বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ। শরতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কাশফুল।মৃদু বাতাসে শরতে কাশফুল মুগ্ধতা ছোড়ায়। কাশফুলে ঘেরা ১০১ একরের ক্যাম্পাস। আকাশের সাদা মেঘের সাথে তাল মিলিয়ে ক্যাম্পাসের কাশফুল গুলো প্রকৃতিতে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিচ্ছে।তুষার কন্যার মত সেজে উঠেছে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস।প্রকৃতির এই মুগ্ধতা দেখতে হুমরি খেয়ে  পড়েছে দর্শনার্থীরা।ক্লাসে ফাকি দিয়ে বা ক্লাসের চাপ হতে মুক্তি পেতে বন্ধুদের সাতে আড্ডায় মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা। গিটার হাতে বন্ধুদের গান এবং কপোত কপোতির প্রেমে এনে দেয় নব্য স্নিগ্ধতা।ফটোগ্রাফাররা কাশফুলের ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে  ক্যামেরা বন্ধি করে রাখে।এ প্রসঙ্গে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাওসিফ সাদাফ বলেন"দীর্ঘদিন পর যখন কাশফুলে সেজে উঠেছে প্রকৃতি।যার বদৌলতে ক্যাম্পাস সেজে  উঠেছে তুষার কন্যার ন্যায়। যা দেখতে সত্যিই অবাক লাগে।

কাশফুলের উদ্ভিদতাত্ত্বিক বৈজ্ঞানিক নাম Saccharum spontaneum. এরা ঘাসজাতীয় জলজ উদ্ভিদ। চিরল পাতার দু’ধারে খুবই ধার। পালকের মতো নরম এর সাদা ফুল। শুভ কাজে কাশফুলের পাতা বা ফুল ব্যবহার করা হয়। মূল ব্যবহার হয় ঔষধি হিসেবে। কাশফুলের বেশ কিছু ঔষধি গুণ রয়েছে। যেমন- পিত্তথলিতে পাথর হলে নিয়মিত গাছের মূলসহ অন্যান্য উপাদান দিয়ে ওষুধ তৈরি করে পান করলে পিত্তথলির পাথর দূর হয়। কাশমূল বেটে চন্দনের মতো নিয়মিত গায়ে মাখলে গায়ের দুর্গন্ধ দূর হয়। শরীরের রঙ হলে উঠে দিনদিন শুভ্র। এছাড়াও শরীরে ব্যথানাশক ফোঁড়ার চিকিৎসায় কাশের মূল ব্যবহৃত হয়।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023