নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জাল সনদে চাকরির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম রাশেদা আক্তার। তিনি কেল্লাবাড়ী কারিগরী ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষিকা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কেল্লাবাড়ী কারিগরী ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা মহাবিদ্যালয়টি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান স্বপনের বাবা মরহুম মোশারফ হোসেন কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৫ সালে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান রাশেদা আক্তার। ২০১৩ সালে এমপিওভুক্ত হন তিনি। জাল সনদে চাকরি করে গত ১১ বছরে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা বেতন বোনাস তুলেছেন তিনি। জাল সনদে চাকরির বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও প্রকাশ্যে আসে ২০২২ সালে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক দুইজন শিক্ষক জানান, ২০২০ সালে ফেব্রæয়ারী মাসে আমাদের প্রতিষ্ঠানে মিনিস্ট্রি অডিট আসে। অডিটে অধ্যক্ষের উপস্থিতে সকল শিক্ষকের সমস্ত তথ্য নিয়ে অধিদপ্তরে ফিরে যান অডিটররা। ২০২২ সালে অডিট রিপোর্ট আসে সেখানে কম্পিউটার শিক্ষক রাশেদা আক্তারের কম্পিউটার সার্টিফিকেটটি ভুয়া বলে উল্লেখ করা হয়। পরে অধ্যক্ষের যোগসাজসে নেকটার (সাবেক নট্রামস) এর অধীনে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাকডেটে অন্য আর একটি কম্পিউটার সার্টিফিকেট কারিগরী অধিদপ্তরের অডিট শাখায় পাঠানো হয় যা এখন পর্যন্ত যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়াধীন আছে বলে তাঁরা জানান।

কম্পিউটার শিক্ষক রাশেদা আক্তার বলেন, আমি যে কম্পিউটার সার্টিফিকেটটি নিয়োগের সময় দিয়েছিলাম, আমাকে ফাঁসানোর জন্য অডিট টিমকে অধ্যক্ষ সেই সার্টিটিফিকেটটি না দিয়ে অন্য একটি সার্টিফিকেট দিয়েছিল। কি কারণে অন্য সার্টিফিকেট দিয়েছে আমি তা জানিনা। পরে ২০২২ সালে অডিট রিপোর্ট আসলে আগের সার্টিফিকেটে সমস্যা থাকায় আমি আমার অর্জিত আর একটি কম্পিউটার সার্টিফিকেট অধিদপ্তরে প্রেরণ করি।

অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান (স্বপন) বলেন, ওই শিক্ষিকা যে সার্টিফিকেট দিয়ে যোগদান করেছে সেটি ভুয়া ছিল। অডিট রিপোর্ট আসার ২২ দিন পরে ওই শিক্ষিকা ব্যাকডেটে আর একটি সার্টিফিকেট অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে, সেটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অধিদপ্তর আমাকে চিঠি দেন। কিন্তু  যাচাই-বাছাইয়ে সেটিও ভুয়া প্রমাণিত হয়। আমি যদি মনে করতাম তাঁকে চাকরিচ্যুত করবো আমি তা পারতাম। কিন্তু কয়েকজনের সুপারিশে ও মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে তাঁকে সেফ করার জন্য আমি অধিদপ্তরে ইতিবাচক রিপোর্ট প্রেরণ করি। অধিদপ্তর যাচাই-বাছাই করে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেল্লাবাড়ী কারিগরী ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি মৌসুমী হক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024