সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা আতঙ্কে ভোমরা বন্দরবাসী। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই পানি ওঠে বসতঘর, সরকারি অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বন্দর এলাকার অধিকাংশ রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। বন্দর প্রতিষ্ঠার ২৮ বছরেও মেলেনি এ সমস্যার সমাধান। এ সংকট মোকাবেলায় পর্যাপ্ত অর্থের অভাবকে দায়ী করছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। এমন অজুহাত মানতে নারাজ বন্দরের বাসিন্দারা।


গত দুই মাসে মৌসুমী বৃষ্টিতে বন্দরের নিচু এলাকার বাড়ির উঠানে জমে হাঁটুপানি। কোথাও কোথাও ঘরের মেঝেতে পানি জমায় দুর্ভোগের যেন শেষ নেই বসবাসকারীদের। মেঘ দেখলেই এইসব এলাকার বসবাস রতদের কপালে দেখা দেয় চিন্তার রেখা। সরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায়ই পানি ওঠে। তৈরি হয় স্থায়ী জলবদ্ধতা। স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। প্রতি বর্ষা মৌসুমে বন্দর আবাসিক এলাকার পাশাপাশি সড়কগুলো তলিয়ে যায় বৃষ্টির পানিতে। হাঁটাচলায় পোহাতে হয় দুর্ভোগ। বসত ঘরে পানি ঢুকলে সদস্যরা কাটান নির্ঘুম রাত।


পথচারী এম নজরুল ইসলাম জানান, পানি নিষ্কাশন জায়গা ভরাট হওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন যেমন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি হালকা বৃষ্টি হলেয় সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। দেখা যায়, হালকা থেকে ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায় বন্দরের রাস্তাঘাট, পার্কিং ইয়ার্ড, শুল্ক স্টেশন চত্বর ও ইমিগ্রেশন চত্বরসহ অধিকাংশ আবাসিক এলাকা। এছাড়া ভোমরা বন্দরের ব্যস্ততম ও অভিজাত এলাকাও এই জলবদ্ধতা থেকে মুক্ত নয়। বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা বলেন, ভোমরা স্থলবন্দর পার্কিং ইয়ার্ডে বর্ষার পানি জমে সৃষ্টি হয় দীর্ঘমেয়াদি জলবদ্ধতা। পার্কিং ইয়ার্ডে অবস্থান করা ভারতীয় আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকগুলো থাকে পানির মধ্যে। ফলে আমদানিকৃত পণ্য লোড-আনলোড করতে শ্রমিকদের পেতে হয় চরম দুর্ভোগ। পচনশীল পণ্য আনলোড করতে শ্রমিকদের থাকতে হয় সতর্কাবস্থায়। জলবদ্ধতার মধ্যে লোড-আনলোড করতে নষ্ট হয় সময়। একজন আমদানিকারক জানান, পার্কিং ইয়ার্ডে অবস্থান করা পণ্যবাহী ট্রাকের চাকা থাকে পানির নিচে। ফলে সময় ক্ষেপণে পণ্য লোড আনলোড করতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয় শ্রমিকদের।


এ ব্যাপারে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ উপ-পরিচালক রুহুল আমিন জানান, পার্কিং ইয়ার্ডে জলাবদ্ধতা নিরসনে অতি দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মাজহারুল মান্নান ভোমরা বন্দর পরিদর্শনে এসে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে ড্রেনেজ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এদিকে জলবদ্ধতার কারণে অফিসগামী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা শিকার হচ্ছে। এই জলবদ্ধতার কারণে যানবহনসহ ভ্যান ও সিএনজির ভাড়া গুনতে হয় প্রায় তিনগুণ। এ পরিস্থিতিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জলবদ্ধতা নিরসন করার দাবি বন্দর সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024