জয়পুরহাটের আক্কেলপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবিদা সুলতানা, প্রভাষক আনোয়ার হোসেন ও সহকারী গ্রন্থাগারিক ফারুক আলম চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছেন কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর থেকে মনোনীত আক্কেলপুর মহিলা কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মামদুদুর মোস্তাকিন নিশাত।
কলেজ সভাপতির পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশের প্রতিবাদে রোববার বেলা সাড়ে ১১ টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবিদা সুলতানা ও বাকি দুই শিক্ষক।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কামরুজ্জামান কমল, পৌর বিএনপির আহবায়ক আলমগীর চৌধুরী বাদশা, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ মোঃ জিয়াউদ্দিন চৌঃ সেকেন্দার, সাবেক প্যানেক মেয়র ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম চপল, বিএনপি নেতা আমিনুর রশিদ ইকু, পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক বায়েজিদ বোস্তামিরসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী।
সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবিদা সুলতানা বলেন, পাঁচ আগষ্টের পরে সরকার কর্তৃক কলেজ পরিচালনা কমিটি ভেঙে দেওয়া পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে জানানো হয়, নতুন কমিটি গঠন করতে। সেই আলোকে আমি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ও বিএনপি নেতাদের সাথে আলোচনা করে বিধি মোতাবেক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর নাম প্রস্তাব পাঠিয়েছি। ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় সেটি আমাদের নিশ্চিতও করেছেন। ইতিমধ্য গত ৩ অক্টোবর কৃষক দলের নেতা নিশাত নামের একটি ছেলে যার বাড়ি ক্ষেতলাল উপজেলায়, সে ঢাকায় বসবাস করে, তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর থেকে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি করে নিয়ে একটি চিঠি আমাদের ই-মেলে পাঠিয়েছে। আমরা তাঁর নাম প্রস্তাবে পাঠায়নি। তাঁকে কখনও দেখিইনি, চিনিও না, সে কখনও কলেজেই আসেনি।
তিনি আরো বলেন, কৃষক দলের নেতার ওই চিঠিতে পেয়ে আমরা হতবাক এটা কেন আসলো। প্রতিষ্ঠানের ভালোর জন্য আমরা যাদেরকে চেয়েছি তাঁদের কে কেন কমিটি দেওয়া হলো না। এরপর নিশাত আমাকে মুঠোফোনে অশ্লীন ভাষায় হুমকি দিয়েছে, যা আমি মুখে আনতে পারবো না। সে আমাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে, বিভিন্নভাবে সে আমার জীবন বিষিয়ে তুলেছে, এতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। এভাবেই চলছে দিনের পর দিন। সর্বশেষ সে গত বৃহস্পতিবার আমাকে শোকজের চিঠি পাঠিয়েছে। সে আইন ও নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে নিজেকে সভাপতি দাবী করে আমিসহ আমার প্রতিষ্ঠানের আরো দু’জন শিক্ষককে শোকজের চিঠি পাঠিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কামরুজ্জামান কমল বলেন, নীতিমালায় যা বলে সে অনুসারে একটি প্রতিষ্ঠান চলে। সেই নীতিমালায় সভাপতি ও বিদ্যুৎসাহী পদে যাঁদের নাম এই প্রতিষ্ঠান থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল। সেগুলোকে তোয়াক্কা না করে আক্কেলপুরের কেউ নয়, এই মাটি মানুষের সাথে যার কোন সর্ম্পক নেই, সে এখনকার প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হয়ে কলেজে ঢোকার চেষ্টা করছেন, আমরা তাঁর প্রতিবাদ করেছি। তিনি নিতিমালা লঙ্ঘন করে সভাপতি দাবী করছেন। তিনি আজ অবধি কলেজে প্রবেশ করেননি, তাঁর আগেই তিনি কেমন করে শোকজের চিঠি পাঠায়। তাই আমরা ভিসি মহদয়ের কাছে দৃষ্টি আকর্ষন করে বলতে চাই আজকের দিনের কথা চিন্তা করে পূর্বের যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি বিলুপ্ত করে নিয়ম অনুসারে যে কমিটি কলেজ থেকে পাঠানো হয়েছে তা বহাল রেখে কলেজের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখুন।
এবিষয়ে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর চৌধুরী বাদশা বলেন, মামদুদুর মোস্তাকিন নিশাত নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই তিনি কলেজের সভাপতি হয়েছেন। কলেজের নামে প্যাড বানিয়ে ভুয়া স্মারকের মাধ্যমে কলেজের অধ্যক্ষসহ দুইজনকে তিনি কারণ দর্শানের নোটিশ দিয়েছেন যা আইন বহিৃভূত। কলেজের উন্নয়নের স্বার্থে। কলেজ থেকে পাঠানো কমিটি বহাল রাখার জন্য সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করছি।
জানতে চাইলে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মামদুদুর মোস্তাকিন নিশাত সাংবাদিকদের বলেন, আমার চেম্বারে বসে একটি সভার মাধ্যমে কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্যকে নিয়ে রেজুলেসন করে অধ্যক্ষসহ দুইজন কে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আমি যা করেছি বিধিমোতাবেক করেছি।