ঝিনাইদহের শৈলকুপায় শীত মৌসুমে পেঁয়াজ আবাদের ধুম পড়ে যায়। এ সময় চাষিদের অনেক শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কৃষি শ্রমিক চাহিদার বড় অংশ মিটিয়ে থাকে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা। উপজেলার প্রতিটি গ্রামের শিক্ষার্থীরা এ কাজে যোগ দেয়। এতে করে একজন শিক্ষার্থী মৌসুমে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করে, যা থেকে সে তার সখের জিনিসপত্র ও পড়ালেখার চাহিদা মেটাতে পারে– বলছিলেন ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শৈলকুপার আউশিয়া গ্রামের সৌরভ হোসেন।
শৈলকুপা সিটি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ইমন হোসেন জানালেন, প্রতি বছর পেঁয়াজ রোপণের মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের চাহিদার বড় অংশ মিটিয়ে থাকে শিক্ষার্থীরা। এতে করে প্রতিদিন ৫০০ টাকার বেশি আয় করে একজন শিক্ষার্থী, যা দিয়ে তারা শখের ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে থাকে।
পেঁয়াজ রোপণের মৌসুমের জন্য শিক্ষার্থীরা সারাবছর অপেক্ষায় থাকে বলে জানান ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় হোসেন। তিনি বলেন, শীত মৌসুমে পড়ালেখার চাপ কম থাকে। এ সুযোগে তারা মাঠে চাষিদের শ্রমিকের কাজ করেন। এ মৌসুমে শিক্ষার্থীরা পারিশ্রমিক হিসেবে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করে থাকেন।
আউশিয়া মাঠের চাষি সাহেব আলী জোয়ার্দ্দার বলেন, জেলার মধ্যে শৈলকুপা উপজেলায় সব থেকে বেশি পেঁয়াজ আবাদ হয়। পেঁয়াজ আবাদের মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা মাঠে পেঁয়াজ রোপণে চাষিদের সহযোগিতা করে। কে ধনী, কে গরিব– শিক্ষার্থীরা এ বিবেচনা করে না। এতে চাষিদের শ্রমিক চাহিদাও মেটে, শিক্ষার্থীরাও বাড়তি আয় করে থাকে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, এটি একটি ইতিবাচক দিক। কারণ বিদেশে শিক্ষার্থীরা পার্টটাইম কাজ করে থাকে। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা অবসরে এ কাজ শুরু করেছে। এতে শিক্ষার্থীদের পরিবারের উপকার হয়। সব যায়গায় এটি চালু হলে দেশের বিভিন্ন অপরাধ কমে যাবে। তিনি জানান, গত মৌসুমে শৈলকুপায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। এবার ১১ থেকে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হবে বলে তিনি আশাবাদী।