সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজেলার শ্রীকলা গ্রামে শ্রীকলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তাটি গর্ত করে পানি নিস্কাশনের ড্রেন নির্মানের নামে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করা হয়েছে। ফলে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব নষ্ট ও জনদুর্ভোগ তৈরী হচ্ছে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শ্রীকলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনে রাস্তার পশ্চিম পাশ দিয়ে পিচের রাস্তারএজিম নষ্ট করে ৩ ফুট চওড়া, ২৮৪ ফুট লম্বা ও সাড়ে ৩ ফুট গভীর ড্রেন তৈরী করা হচ্ছে। কোন ইঞ্জিনিয়ারিং প্লান ছাড়া কাজটি করছে শ্রীকলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাশেদ। গত পাঁচ মাস ধরে রাস্তাটি বিভিন্ন জায়গায় গর্ত করে এবং ভারী ডাম্পারে মাটি বহন ও ভেকু চলায়ে ইতিমধ্যে রাস্তার মাঝখান দিয়ে বড় ফাটল তৈরী হয়েছে। রাস্তার এজিম ধ্বংস নেমেছে।


বর্তমানে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ নির্মাাধিন ড্রেনটি কোন পরিকল্পনা ও বাজেট ছাড়া তৈরী করা হচ্ছে। ড্রেনের কোথাও কোন প্লাসটার নেই। ড্রেনের দুপাশে বালি দিয়ে ভরাট করা হয়নি। এমনকি নিচে যে ঢালাই দেওয়া হয়েছে তাতে কোন রড নেই। ইতিমধ্যে অরক্ষিত ড্রেনে মানুষ পড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। ড্রেনটি ঢাকনার জন্য নির্মান করা ঢালাইতে কোন রড নেই। যার ফলে কিছু ঢাকনা ভেঙ্গে গেছে।


কাজের এমন দুরাবস্থার দেখে স্থানীয় শ্রীকলা গ্রামের বাসিন্দা ও শ্রীকলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক অভিভাবক সদস্য সাংবাদিক মোঃ ইশারাত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে ছাত্র জনতার বিপ্লবের পর প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়। এসময় শ্রীকলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সদস্য সচিব ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাশেদ এর কাছে স্থানীয় ছাত্র জনতা স্কুলে নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ বানিজ্যের ১৪ লক্ষ টাকা কোথায় জানতে চান।


তখন তিনি একটি পক্ষকে ম্যানেজ করে ২লক্ষ টাকা দিয়ে ড্রেন নির্মানের কাজ ধরিয়ে দেন। কোন বাজেট ও প্লান ছাড়া তড়িঘড়ি করে কাজটি করতে গিয়ে বর্তমানে এমন বেহাল অবস্থা। তার উপর ভেকু ও ডাম্পার চালিয়ে রাস্তাটির বারোটা বাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার জনামতে রাস্তাটি ২ বছর আগে নির্মান করা হয়েছে। নির্মানের সময় ইঞ্জিনিয়ারিং প্লান অনুযায়ী পর্যাপ্ত কালভার্ট রাখা হয়েছে। কিন্তু সে কালভাট ব্যবহার না করে সুবিধাভোগীরা তা বন্দ করে দিয়ে উল্টো পানি নিষ্কাশনের নামে রাস্তাটি খুড়ে ক্ষতি সাধন করেছে। যা এখন জনদুভোগে পরিনত হয়েছে।


শ্রীকলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক অভিভাবক সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন যে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, কয়েকজন সহকারী শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টরা দেশে ছাত্র জনতার অভ্যুখানের পর নিজের চাকুরী সামাল দিতে একটি মহলের সাথে যোগসাযোগ করে পানি সরানোর নামে রাস্তাটি খুড়ে একেবারেই ক্ষতি সাধন করা হয়েছে।


বিষয়টি নিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবর অভিযোগকারী শ্রীকলা গ্রামের বাসিন্দা রেজওয়ান আহম্মেদ বলেন” রাস্তাটি আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই রাস্তা দিয়ে শ্রীকলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শ্রীকলা মহিলা দাখিল মাদ্রাসা, শ্রীকলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীকলা ফোরকানিয়া মাদ্রাসার প্রায় দেড় হাজার ছাত্রছাত্রী ও বারোয়ানি বিলের কয়েক শত মৎস্য চাষী চলাচল করে। সেই রাস্তাটি খুড়ে, ভেকু ডাম্বার চালিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হলো। এই মুহুর্তে তদন্ত সাপেক্ষ দৃষ্টান্ত মুলক আইনী ব্যবস্থা না হলে বারবার এমন ক্ষতি সাধন চলতে থাকবে।


উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আমি অভিযোগ করেছি। বিষয়টির দ্রুত সমাধান দাবি জানাই।রাস্তা খুড়ে ক্ষতি সাধন করছেন কেন,বাজেট কোথায় পেলেন? উপজেলা প্রকৌশলী জানে কিনা। তিনি প্লান দিয়েছেন কিনা? উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুমোতি নিয়েছেন কিনা, জানতে চাইলে শ্রীকলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাশেদ কোন সদুত্তোর না দিয়ে ঘটনা স্থল ছেড়ে দ্রুত চলে যান।


বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন যে, বিষয়টি আমি জেনেছি মাত্র। যারা কাজটি করেছে তারা কোটি কোটি টাকা ক্ষতি সাধন করেছে। কোন কর্তৃপক্ষ এমন কাজ করতে চাইলে উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে লিখিত জানাতে হয়। প্লান অনুযায়ী বাজেট করতে হয়। এক্ষেত্রে এসবের কোন নিয়ম মানা হয়নি। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে তারা এমন কাজ করেছে। আমি ইউএনও মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যবস্থা করবো।


এব্যাপারে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মন্ডল বলেন, আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে জানান।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024