|
Date: 2024-12-31 06:28:45 |
নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর প্রাক্কালে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহিত করতে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভিন্নধর্মী এক প্রচারাভিযান আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর ২৪) সকাল ১০টায় স্বদেশ, ক্লিন এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি) এর একটি জোট এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
প্রচারাভিযানে উপস্থিত ছিলেন স্বদেশ সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রধান মাধব চন্দ্র দত্ত, জেলা ভুমিহীন সমিতির আব্দুস সামাদ, মফিজুল রহমান, কওসার আলী, নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবুল, উদীচীর স্বপন পান্ডে, যুব প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, মাইদা রহমান, মাহাবুবুর রহমান, সাংবাদিক, উন্নয়ন কর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ।
প্রচারাভিযানে স্বদেশ সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রধান মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, এই প্রচারাভিযান খুলনা বিভাগ এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি টেকসই, পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ গড়তে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি গ্রহণের পথে বহু বছর ধরে বিভিন্ন বাধা বিদ্যমান। এই বাধাগুলোর মধ্যে রয়েছে জটিল অনুমোদন প্রক্রিয়া, আর্থিক সীমাবদ্ধতা, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং নীতিমালার ঘাটতি।
সাতক্ষীরার এই উদ্যোগ শুধু বাধাগুলো শনাক্ত করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং এগুলো সমাধানের জন্য নির্দিষ্ট দাবিও উত্থাপন করেছে।
মাধব দত্ত বলেন, একটি কেন্দ্রীয় অনুমোদন প্রক্রিয়া ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে, যা নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত এবং সহজতর করবে। এই উদ্যোগটি ব্যবস্থাগত বিলম্ব দূর করে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করবে। একই সঙ্গে, স্মার্ট গ্রিড এবং নেট এনার্জি মিটারিং (এনইএম) এর মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তি জাতীয় গ্রিডে আরও কার্যকরভাবে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
জাতীয় বিদ্যুৎ বাজেটের অন্তত ২০% নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য বরাদ্দের দাবি এই প্রচারণার অন্যতম প্রধান অঙ্গ। এই বাজেট উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়ন, গবেষণা, এবং টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়নে নিশ্চিত ভূমিকা রাখবে।
অর্থায়ন সংকট দূর করার লক্ষ্যে দেশীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য নবায়নযোগ্য শক্তিতে অন্তত ২৫% অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। এই উদ্যোগ সোলার, উইন্ড এবং অন্যান্য টেকসই শক্তি প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন সরবরাহ নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে, নবায়নযোগ্য শক্তি সরঞ্জামের উপর আমদানি শুল্ক এবং ট্যারিফ কমানোর দাবিও তোলা হয়েছে, যাতে এই প্রযুক্তি আরও সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য হয়।
এছাড়াও সকল নবায়নযোগ্য এবং জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে “নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পে” নীতি দ্রুত চালুর দাবী করা হয়। এই নীতি গ্রহণের ফলে ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা থেকে আমরা অচিরেই বেরিয়ে আসতে পারবো।
বিদ্যুৎ বিলিংয়ে ন্যায্যতার জন্য “বিদ্যুৎ না থাকলে বিল নয়” নীতি চালুর দাবিও অন্যতম। এই নীতি গ্রাহকদের সঠিক সেবার নিশ্চয়তা প্রদান করবে এবং সেবা প্রদানকারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
২০২৫ সালে, এই প্রচারণার মাধ্যমে শুধুমাত্র সাতক্ষীরার নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন দিনের সূচনা। নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে একটি পরিচ্ছন্ন এবং টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্য আমাদের সবার।
© Deshchitro 2024