শহর, শহরতলী ও গ্রামঅঞ্চলের হাট বাজারগুলোতে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। চাল দিয়ে চালবাজি বর্তমানে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতীতে কখনোই ভরা মৌসুমে চালের মূল্য বৃদ্ধির এমন প্রবণতা দেখা যায়নি। চালের দাম কমানোর জন্য সরকারের নানামুখী উদ্যোগের পরও সুফল মিলছে না। দাম কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চালের ওপর থেকে সব আমদানি ও নিয়ন্ত্রণ শুল্ক প্রত্যাহার করেছে দুই মাস আগে। এরপর প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চার আমদানি হয়েছে। আরও লক্ষ টন চাল আমদানির অপেক্ষায়। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন প্রাপ্ত ৬৯টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ১৩ নভেম্বর থেকে ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ভোমরা বন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে ৮১ হাজার ১৫৯ মেট্রিক টন বিভিন্ন প্রকার চাল আমদানি করেছে। এরমধ্যে ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪০টি আমদানিকারক ভারত থেকে ১৭ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছে। তারপরও ইতিবাচক কোন প্রভাব বাজারে নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ উঠেছে বিদেশ থেকে যে চাল আমদানি হচ্ছে তার বড় অংশ বাজারে বিক্রি না করে গুদামজাত করে রাখছেন আমদানিকারকরা। ফলে ভরা মৌসুমে চালের দাম মানুষের নাগালে থাকছে না। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের একটি মনিটারিং প্রতিনিধিটি ভোমরা বন্দরের কয়েকটি চালের গোদা পরিদর্শন করেছেন। চাল আমদানিকারক প্রতিনিধিকে অতি দ্রুত গুদাম থেকে চাল বাজারজাত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ক্রেতা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ হাতে গোনা কিছু স্বয়ংক্রিয় চালকল ও বুধবার সিন্ডিকেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এছাড়া যারা ভারত থেকে চাল আমদানি করছেন, তারা গুদামজাত করে রাখায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে না। চালের দাম ভরা মৌসুমে বৃদ্ধি পাওয়ায় অচিরেই তা নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে-এমন আশংকা করছেন ভক্তভোগীরা। বন্ধ সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছেন, ভারত থেকে আমদানিকৃত চালের লট বিক্রি না করে অধিক লভ্যাংশের আশায় গুদামজাত করে রাখা হয়েছে। ক্রেতাদের নিকট বিক্রয়ের অভিযোগ এমএ পরিকল্পিতভাবে এসব চাল গোডাউনজাত করে রেখেছে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা। আমদানিকৃত হাজার হাজার মেট্রিক টন চাল সঠিক মূল্য প্রাপ্তি ও বিক্রয়ের অজুহাত এনে গুদামজাত করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। চাল বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সাধারণ ভোক্তারা পড়েছেন অসহায় অবস্থায়। গত পাঁচ মাসে খাদ্যপণ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম বেপরোয়াভাবে বাড়ছে তো বাড়ছেই। সরকারি পরিসংখ্যানেও স্বীকার করা হয়েছে নাড়ামুখী পদক্ষেপ নেওয়ার পরও মূল্যস্ফীতি ক্রমন্বয়ে বেড়েই চলছে।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024