◾মো. রবিন ইসলাম || পরিবেশই হলো প্রাণের ধারক ও বাহক।পরিবেশের ওপর নির্ভর করে মানুষ, উদ্ভিদ ও প্রাণীর উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে।প্রতিটি জীবই বাঁচার জন্য নিজ নিজ পরিবেশ থেকে প্রয়োজনীয়।উপকরণ সংগ্রহ করে।যদি সে পরিবেশ কোন কারণে দূষিত হয়ে ওঠে,তবে তা প্রাণীর অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। অথচ আমাদের চারপাশের পরিবেশ প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে।এই পরিবেশ দূষণের যেসব উপাদান রয়েছে তারমধ্যে অন্যতম পলিথিন। 


পলিথিন প্রকৃত সৃষ্ট কোন পদার্থ নয়।এটি রাসায়নিক পদার্থ। পলিথিন বিষাক্ত প্রোপাইলিনের সঙ্গে পেট্রোলিয়াম হাইড্রো কার্বনের ৩/৪ মলিকুল সংমিশ্রণে তৈরি হয়।বিঙানের পরিভাষায় এর নাম পলিথাইলিন।পলিথিন অন্যান দ্রব্যের মতো পচনশীল নয়।এটা কে কোন অনুজীব মাইক্রোন অর্গানিজম খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে না।যদি পলিথিন ভেঙে গিয়ে মিথেন বা কার্বন ডাই-অক্সাইডে পরিণত হতো তাহলে কোন সমস্যাই ছিলো না।পলিথিন রুপান্তরিত হয়না বলে এটি পচে না।


আজ থেকে প্রায় কুড়ি বছর আগে যে পলিথিনের যাত্রা শুরু হয়েছিল তা আজ এতো ব্যপক আকারে ধারণ করেছে যে গোটা দেশটাই যেন পলিথিনে ছেঁয়া গেছে।এমন কোন জায়গায় নেই যেখানে এর ব্যবহার নেই।বর্তমান এমন অবস্থায় দাড়িয়েছে যে, যদি কেু বাজারে খালি হাতে যায় ফিরার পথে দশ বারোটা পলিথিন হাতে নিয়ে বাসায় ফিরে।দামে সস্তা ও রঙিন পলিথিন সহজেই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে।বিক্রেতারাও সহজেই জিনিসপত্রের সাথে দিয়ে দেয়।সাধারণত শপিং ব্যাগ হিসাবে বেশি ব্যবহার হয়।কিন্তু দুঃখ জনক হলো এর বহুল অপব্যবহার হচ্ছে। ক্ষতিকারক এ পদার্থ সম্পর্কে আমাদের তেমন ধারনা না থাকায় আমরা প্রতিনিয়ত এটি ব্যবহার করছি।বাজার থেকে বাজার নিয়ে৷ গিয়ে পলিথিন গুলো ডাস্টবিনে অথবা বাড়ির আশাপাশে ফেলে রেখে আমরা ভেজাল মুক্ত হয়ে যায়।কম দাম হওয়ার কারনে এর অপব্যবহার হচ্ছে এবং পরিবেশের জন্য হুমকি দিন দিন বেড়েই চলছে।


পলিথিন রাসায়নিক পদার্থ হওয়ায় পরিবেশের জন্য এটি মোটেও উপযোগী নয়।পলিথিনের ব্যাপক ক্ষতি কারক দিক রয়েছে। কিছু ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরা হলো-

১.প্রথমত এটি রাসায়নিক উপাদানে তৈরি বিধায় এটি স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

২.পলিথিনের সাথে বিষফোল নামে বিষ নির্গত হয় যার কারনে এটি দিয়ে পরিবহন করা বাজার, বিষাক্ত হয়ে যায় এবং এ খাদ্য দ্রব্য গ্রহনে বিষক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।

৩.এটি পচনশীল নয় বিধায় এটি মাটির সঙ্গে মিশে যায়না।ফলে মাটির উর্বর শক্তি বিনষ্ট হয়।

৪.পলিথিন ড্রেনে পড়লে তা পানি যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেয়। যার কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

৫.পলিব্যাগ পোড়ালে বায়ুদূষণ হয়।

এছাড়া আরও অনেক ক্ষতিকারক দিক রয়েছে রাসায়নিক এ পদার্থের।

পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয় অনেক বার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা কখনো বাস্তবায়ন হয়নি।পলিথিন নিষিদ্ধের জন্য শুধু পদক্ষেপ নিলেই হবেনা বাড়াতে হবে অভিযান।সেই সাথে নাগরিকদের হকে হবে সচেতন। বিভিন্ন সচেতন মূলক আলোচনা করে জনগণ কে সচেতন করতে হবে ক্ষতিকারক এ পদার্থ সম্পর্কে। সেই সাথে পলিথিনের ক্ষতিকারক দিক গুলো বেশি বেশি প্রচার করে জনসচেতনতা সৃষ্টি জরুরি। তবেই বাংলাদেশ পলিথিনমুক্ত হবে এবং দেশটা সবার বসবাসের উপযোগী হবে।


লেখক: মো. রবিন ইসলাম

শিক্ষার্থী,বাংলা বিভাগ

ঢাকা কলেজ, ঢাকা


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024