জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) একমাত্র ছাত্র হলের শিক্ষার্থীরা মাত্র ১০০ টাকায় তিন বেলা মানসম্মত খাবার পাচ্ছেন। নিয়মিত খাবারের পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে বিশেষ মেন্যুরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যেখানে গরু বা খাসির মাংস এবং পোলাওসহ উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তিন বেলার খাবারের তালিকায় রয়েছে, সকালে আলু, বেগুন বা শিমের ভর্তা বা ভাজি, ডাল ও ভাত। তবে কোনো কোনো দিন খিচুড়িরও ব্যবস্থা থাকে। দুপুরের খাবারে মুরগির মাংস, আলু, শিম বা অন্যান্য সবজি ভাজি, ডাল ও ভাত এবং রাতে শিক্ষার্থীরা মাছ, সবজি ও ডালের সঙ্গে ভাত পান। যারা মাছ খান না, তাদের জন্য ডিম ভাজি বা ডিমের তরকারির ব্যবস্থা থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আশেপাশে ভালো খাবার হোটেল না থাকায় শিক্ষার্থীদের বিষয়টি মাথায় রেখেই তিন বেলা খাবার চালু করা হয়েছে। এছাড়া শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মধ্যাহ্নভোজে খাসির মাংস ও পোলাও পরিবেশন করা হয়। মাঝে মাঝে এসব বিশেষ আয়োজনে দই বা মিষ্টিও যুক্ত থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান দায়িত্ব গ্রহণের পর ছাত্র হলের ডাইনিং ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন। তখন শিক্ষার্থীরা খাবারের মানোন্নয়নের অনুরোধ করলে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেন। রান্নার জন্য অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের নির্দেশও দেন তিনি। পাশাপাশি তিন বেলা মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে বলেন। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০০ টাকায় উন্নতমানের তিন বেলা খাবার পাচ্ছেন। উপাচার্যের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের অনুরোধের পর শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ভিসি স্যারের নির্দেশে তিন বেলা খাবার চালু হয়েছে। ফলে এখন আমরা তিন বেলা মানসম্মত খাবার পাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব বলেন, “আমি হলে থাকার শুরু থেকেই তিন বেলা খাবার পাওয়ার কথা শুনেছিলাম, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা নিয়মিত তিন বেলা মানসম্মত খাবার পাচ্ছি, যা আগে সম্ভব হয়নি। এখন প্রতি সপ্তাহে বিশেষ খাবারও যুক্ত হয়েছে।” শিক্ষার্থীরা জানান, আগে ডাইনিংয়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল ছাত্রলীগের হাতে। অভিযোগ ছিল, তারা ডাইনিংয়ের অর্থ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করতেন, ফলে খাবারের মান ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। অনেক শিক্ষার্থী হলে রান্না করতেন বা বাইরের হোটেলে খেতে বাধ্য হতেন। তবে এখন বর্তমান ম্যানেজারদের দক্ষ পরিচালনার জন্যই তিন বেলা ভালো খাবার পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। বর্তমান ডাইনিং ম্যানেজার সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সুলতান মাহমুদ বলেন বলেন, “তিন বেলা খাবারের প্রস্তাব দেয়ার সময় কেউ দায়িত্ব নিতে চাইছিল না। পরে আমি ও আমার বন্ধু আমজাদ দায়িত্ব নিই। স্বচ্ছতা ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার কারণে আমরা সফলভাবে ডাইনিং পরিচালনা করতে পারছি।” বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের জন্য যেমন স্বস্তিদায়ক, তেমনি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024