কুতুবদিয়ায়  কুতুব শরীফ দরবারে আগামী ১৮ ও  ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হযরতুল আল্লামা শাহ আব্দুল মালেক আল-কুতুবী (রহ.)-এর ২৫তম বার্ষিক ওরশ ও ফাতেহা শরীফ।মূল অনুষ্ঠানের আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে শুরু হবে দুই দিনব্যাপী আয়োজন, যা ১৯ ফেব্রুয়ারি আখেরি মুনাজাতের মধ্যে দিয়ে  শেষ হবে।

নিরাপত্তার স্বার্থে এ আগামী ১৮,১৯,২০,ফেব্রুয়ারী-২৫  মহিলাদের দরবারে জেয়ারতে না আসার অনুরোধ জানিয়েছে আয়োজক কমিটি। এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতি বছর আট থেকে দশ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে কুতুবদিয়ায়।দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত লক্ষাধিক ভক্তের থাকা-খাওয়া ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা আলাদা প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। জেলা, উপজেলা ও মহানগরভিত্তিক প্যান্ডেলের পাশাপাশি উট, গরু, ছাগল ও মহিষ জবাই, রান্না এবং বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

আয়োজক কমিটির যুগ্ম সচিব হুমায়ুন কবির বাদশা জানান, গত এক মাস ধরে শতাধিক শ্রমিক নিরলসভাবে এসব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। সংশ্লিষ্ট ইজারাদারকে নদী পথে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটসহ নৌযানের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করা হয়েছে।

১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে ইসলামিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শুরু হবে কর্মসূচি। কুতুবদিয়ার স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও হেফজখানার শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেবেন। দিনভর চলবে ওলামায়ে কেরামদের বক্তৃতা, ভক্তদের স্মৃতিচারণ, হাম্দ-নাত, শানে গাউসে মুখতার ও গজল পরিবেশনা।

১৯ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে দরবারের পরিচালক শাহজাদা শেখ ফরিদ আল-কুতুবী (মজিআ) সমাপনী বক্তব্য ও আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।

লাখো ভক্তের সমাগম উপলক্ষ্যে,আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত যাত্রী না বোঝাই করতে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দরবারের পরিচালক শাহজাদা শেখ ফরিদ আল-কুতুবী (মজিআ) বলেন, “জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। এ কারণে মহিলাদের সাময়িকভাবে এই ২দিন দরবারে না আসার অনুরোধ করা হয়েছে।”

এই ফাতেহা উৎসব কুতুবদিয়ার স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চার করে। পণ্য বিক্রেতাদের রঙবেরঙের পসরা সাজানো হলেও অতিরিক্ত ভাড়া ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উৎসবের আমেজে কিছুটা ভাঁটার সৃষ্টি করে। তবুও, আয়োজকরা এবার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর।

কুতুব শরীফ দরবারের এ আয়োজন কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠানই নয়, বরং এটি সামাজিক সম্প্রীতি ও আঞ্চলিক অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র।

আয়োজক কমিটির সদস্য , হিলফুল ফুজুল কুতুবদিয়ার সভাপতি শেখ আকতারুল হক বলেন, “এই মহামিলনে মানুষ তাদের বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও মানবিক বন্ধনকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেন।দরবার কর্তৃপক্ষ দেশ-বিদেশের সকল ভক্ত-অনুরক্তকে এই পবিত্র সম্মেলনে অংশ নিয়ে আধ্যাত্মিক শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।




প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024