|
Date: 2025-02-23 11:31:29 |
জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্র রাজনীতি চান না। ঐ শিক্ষার্থীরা মনে করেন দলীয় ছাত্র সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জাবিপ্রবিসাস) অনলাইন জরিপের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত শুক্রবার জাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে ‘জাবিপ্রবিতে দলীয় ছাত্র রাজনীতি ও রাজনৈতিক কার্যক্রম বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিমত’ শীর্ষক জরিপের তথ্যের ফল প্রকাশিত হয়৷
গত ১৯ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত জাবিপ্রবিসাস পরিচালিত অনলাইন জরিপে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি বিভাগের ২৫৬ জন শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। জরিপ অনুযায়ী ৯১ শতাংশ তথা ২৩৫ জন শিক্ষার্থী মনে করেন ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্ররাজনীতির প্রয়জন নেই৷ এর বিপরীতে ৮ শতাংশ তথা ২১ জন শিক্ষার্থী দলীয় ছাত্ররাজনীতির পক্ষে মত দেন৷ অন্যদিকে ৫ হাজার ৮০০ সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ ‘Jamalpur Science & Technology University (JSTU) Family’ গ্রুপে দলীয় ছাত্ররাজনীতি বা ছাত্রসংগঠন নিয়ে করা আরেক জরিপে উঠে আসে প্রায় অভিন্ন চিত্র৷ এতে ৭ বিভাগের ২৯৫ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহনে ৮৩ শতাংশ তথা ২৪৭ জন ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্ররাজনীতি চান না৷
এর বিপরীতে ৪ শতাংশ তথা ১২ জন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম চান৷ এদিকে ১২ শতাংশ তথা ৩৬ জন শিক্ষার্থী মনে করেন নির্বাচিত ছাত্র সংসদই পারে উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধান করতে৷ এসব জরিপের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে অনলাইনে বেশ সরব হয়েছেন শিক্ষার্থীরা৷ তাদের দাবি দলীয় লেঁজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্ন করে৷ বিশেষ করে ক্ষমতাশীন ছাত্রসংগঠনের জোরপূর্বক দলীয় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং, বাকস্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তা হরণ, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-সিট বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মের জন্ম দেয়৷ ইতিপূর্বের নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের উল্লেখিত অপকর্মের দাগ এখনো ভুলতে পারেননি শিক্ষার্থীরা৷ এর আগে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের অভিমত জানতে ও রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে বিএনপির ৩১ দফার প্রচারনা করতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি কতৃক গঠিত টিমের ৩ নেতা ক্যাম্পাসে আসলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন৷
এদিকে ছাত্রশিবিরের গুপ্ত রাজনীতিরও বেশ সমালোচনার করেন শিক্ষার্থীরা৷ তবে দলীয় ছাত্ররাজনীতির বিকল্প হিসেবে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সুপারিশ করেন তারা৷ এবং নিয়মিত ছাত্র-শিক্ষক মতবিনিময় সভা আয়োজন করলে ক্যাম্পাসের সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত হবে বলে ধারণা শিক্ষার্থীদের অনেকাংশ৷ উল্লেখ্য, ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি বেশ জোরালে হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৯ই আগস্ট এক অফিস আদেশ জারি করে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করে৷
© Deshchitro 2024