◾সজিব হোসেন  : রমজান মাস ইসলাম ধর্মের জন্য একটি পবিত্র মাস। যা বর্ষপঞ্জির চন্দ্র হিজরির নবম মাস। এ মাসের অন্যতম ইবাদত হচ্ছে সিয়াম সাধনা করা। সাওম (صوم) বা রোজা ইসলামী শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যার অর্থ হলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পানাহার ও কিছু নির্দিষ্ট কার্যাবলী থেকে বিরত থাকা।


ইসলামের পরিভাষায় সুবহে সাদিক (ভোরের প্রথম আলো) থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়তের সাথে সকল প্রকার খাদ্য, পানীয় ও যৌন সম্পর্কসহ সকল হারাম থেকে বিরত থাকার নামই সাওম বা রোজা। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে এটি একটি। এই মাসে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদতে মগ্ন থাকে। রোজার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি ও সংযমন অনুশীলন হয়।ধৈর্য সহানুভূতি বৃদ্ধি পায় সেইসাথে গরিব -দুঃখীর কষ্ট অনুভব করা যায়। নৈতিকতা সৃষ্টি হয়। আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।


হদিসে বর্ণিত আছে - "সাওম হচ্ছে আত্মশুদ্ধির ঢাল স্বরুপ,যা জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে।"( সহি মুসলিম) শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের উপর রোজা ফরজ। রমজান মাসেই কুরআন নাজিল হয়েছে, যা এ মাসের মর্যাদাকে আরও বৃদ্ধি করেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন— "রমজান মাস, যে মাসে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, যা মানুষের জন্য হিদায়াত ও সত্য পথনির্দেশ এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্যকারী।" (সুরা আল-বাকারা: ১৮৫)


মূলত রমজান মাসকে রহমত, মাগফিরাত ও নাযাত এই তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এ মাসে বেশি তাকওয়া অর্জনে রোজা ও তারাবি নামাজের পাশাপাশি মুসলিম জনগোষ্ঠী কুরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্ন ইবাদতে মশগুল থাকে। ধনীরা গরিব অসহায় মানুষকে দান সদকা যাকাত ইত্যাদি প্রদান করে এক ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করে থাকে। এছাড়াও এ মাসের শেষের দশ দিনে শবে কদর তালাশ করা হয়। যে রজনীর ইবাদত হাজার মাস ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। গুনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির মতো ফজিলত আল্লাহ পাক দিয়ে থাকেন। রমজান শুধু উপবাসের মাস নয়, এটি আত্মশুদ্ধি, তাকওয়া অর্জন এবং সমাজে সহানুভূতি ও সংহতি বৃদ্ধির মাস। যারা এই মাসের গুরুত্ব বোঝে এবং যথাযথভাবে ইবাদত করে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করবে। 
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024