|
Date: 2025-03-08 14:23:34 |
গত কয়েক দশকে, ন্যাটো ছিল সেই অবিচ্ছেদ্য বন্ধন যা ইউরোপের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করত। তবে এখন সেই দৃঢ় বন্ধনের ভিত্তি—যুক্তরাষ্ট্র—একটি প্রতারণামূলক ভঙ্গুরতার মুখোমুখি হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগাম রুচির উন্মুক্ত প্রতিবাদ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি অসন্তোষ এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি তার কিছু হাস্যকর প্রশংসা, ইউরোপের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের মনে গভীর প্রশ্ন জাগিয়ে তুলেছে: “যদি আমেরিকা সরে যায়, তাহলে ন্যাটো কি টিকে থাকতে পারবে?” যে যুগে ইউরোপ আমেরিকাকে নির্ভরতার প্রতীক মনে করত, সেই দিনের গৌরব এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৮০ বছরের ধারাবাহিক সহযোগিতায়, যুক্তরাষ্ট্র ছিল সেই নিরাপত্তা দায়িত্বশীল প্রান্তরেখা, যার মাধ্যমে ইউরোপে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা রক্ষা পেত। স্নায়ু যুদ্ধের সময়, যখন মার্কিন সৈন্যদের উপস্থিতি ছিল সোভিয়েত সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বাধা, তখনই ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল অপরাজেয়। কিন্তু আজকের দিন, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র নীতি ও ন্যাটোর ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্ক উঠছে, তখন সেই অভিন্নতা ও আস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ ধারণ করছে।
ট্রাম্পের শাসনকালে, ইউরোপীয় নেতারা প্রথম থেকেই লক্ষ্য করেছিলেন—একটি বিশাল ছায়া ধীরে ধীরে তাদের ওপর ঝুঁকতে শুরু করেছে। ট্রাম্পের উগ্র বক্তব্য, বিশেষ করে যখন তিনি জেলেনস্কির সাথে ওভাল অফিসে বিরোধ প্রকাশ করেছিলেন, তখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে যুক্তরাষ্ট্র কেবল একটি রাজনৈতিক পার্টনারের মতো আচরণ করবে না, বরং সে তার স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিবে। তাঁর মন্তব্যে ছিল এক ধরনের ব্যঙ্গাত্মক ইঙ্গিত, যা ইউরোপকে ভাবতে বাধ্য করলো: "যদি তোমরা যথেষ্ট অর্থ না দাও, তাহলে আমরা তোমাদের রক্ষা করবই না।" এই কথাগুলো শুধুমাত্র ইউক্রেনের জন্য নয়, বরং পুরো ইউরোপের নিরাপত্তার ভবিষ্যতের জন্যও মারাত্মক সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর অন্যতম প্রধান অবদানকারী, তবে জোটটি শুধুমাত্র তার ওপর নির্ভর করে নয়। ন্যাটোর বাকি ৩১টি দেশ মিলিয়ে এক মিলিয়নেরও বেশি সেনা, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং অসংখ্য সামরিক অবকাঠামো নিয়ে গঠিত। বিশ্লেষকরা বলছেন, "আমেরিকা ছাড়া ন্যাটো ভেঙ্গে পড়বে না; বরং ইউরোপ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে তাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।" আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণা সংস্থা (IISS)-এর ইউরোপীয় নির্বাহী পরিচালক বেন শ্রেয়ার একবার বলেন, "ইউরোপ যথেষ্ট সম্পদ, প্রযুক্তি ও সামরিক দক্ষতা রাখে—প্রশ্নটি শুধু তা কি তারা ঐক্যবদ্ধভাবে তা ব্যবহার করতে চায় কি না।" এ কথা নিশ্চিত করে যে, যদি ইউরোপ তার অভিজ্ঞতা ও আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগায়, তবে একটি শক্তিশালী, স্বনির্ভর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
ন্যাটো সামরিক বাজেটের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি প্রায় ১৬% অবদান রাখে, তারপর যুক্তরাজ্য ১১% ও ফ্রান্স ১০% অবদান রাখে। তবে, সামরিক দিক থেকে ইউরোপীয় দেশগুলো একত্রিত হয়ে একটি বিশাল শক্তির প্রতীক হয়ে উঠতে পারে।
এই সংখ্যাগুলি স্পষ্টই তুলে ধরে যে, ন্যাটো শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের উপহার নয়। ইউরোপের নিজস্ব সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে, তারা নিজেদেরই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
সূত্র: International Institute for Strategic Studies (IISS) – "The Military Balance" প্রতিবেদন
ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা হ্রাস পেলে ইউরোপের জন্য এক নতুন দিক খুলে যাবে। কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, যদি ইউরোপ বুঝতে পারে যে তাদের নিরাপত্তার জন্য শুধুমাত্র আমেরিকায় নির্ভর করে চলা সম্ভব নয়, তবে তারা নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আরো দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। বিশ্বের বিভিন্ন সামরিক বিশ্লেষক যেমন মরিটজ গ্রাফরাথ (Moritz Graefrath) ও জন লাফ (John Lough) এ বিষয়ে তীক্ষ্ণ মন্তব্য করেছেন। জন লাফ, চ্যাথাম হাউস থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সহযোগী ফেলো, বলেছেন, "একবার আপনি সেই প্রতিশ্রুতি হারিয়ে ফেললে, পুরো সিস্টেমটি ভেঙ্গে পড়ে।" এ কথা স্পষ্ট করে যে, ইউরোপ যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি আর না পায়, তবে তাদের নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ত্বরান্বিত করা অত্যাবশ্যক। তবে সেই সাথে, কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পের এই উগ্র মন্তব্যগুলো শুধুমাত্র রাজনৈতিক হুলস্টুলা হতে পারে—এক ধরনের চাপ প্রয়োগের কৌশল, যার মাধ্যমে ইউরোপকে নিজেদের ব্যয় বাড়াতে বাধ্য করা হবে। তবে এই হুমকি যদি সত্যিই বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ইউরোপকে নতুন করে সাজতে হবে তার নিরাপত্তা নীতি ও সামরিক অবকাঠামো।
ট্রাম্পের এই নীতি পরিবর্তন কেবল সামরিক ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলবে না, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে। ইউরোপ যদি আমেরিকার নিরলস সাহায্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, তবে তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীনতা বৃদ্ধি পাবে। তবে এর বিপরীতে, একদিকে আমেরিকাকে ছেড়ে দিলে একটি বৃহত্তর জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে—বিশেষ করে যখন রাশিয়া এবং অন্যান্য প্রভাবশালী শক্তিগুলো তাদের নিজ নিজ কৌশলগত লক্ষ্য সাধনে লিপ্ত থাকে। বিশ্লেষকরা বলেন, "যদি ইউরোপ স্বাধীনভাবে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে, তাহলে তা শুধু সামরিক ক্ষেত্রে নয়, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।" এদিকে, রাশিয়া এই পরিবর্তন থেকে কী ধরনের সুবিধা নিতে পারে, তা নিয়ে এখনও সন্দেহ রয়েছে।
যদিও অনেকেই আশাবাদী যে ইউরোপ নিজেরাই একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হবে, তবুও সেই পথ সহজ নয়। প্রথমেই, ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং যৌথভাবে পদক্ষেপ নেওয়া একেবারেই সহজ নয়। প্রতিটি দেশের নিজস্ব স্বার্থ, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি রয়েছে, যা একত্রে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া, ইউরোপের কিছু দেশ এখনও নিজস্ব সামরিক বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছে। এই বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরও কার্যকরী সহযোগিতা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। যদি তা সম্ভব হয়, তবে ইউরোপ নিশ্চিতভাবে একটি শক্তিশালী, স্বাধীন প্রতিরক্ষা নীতি গ্রহণ করতে পারবে, যা শুধু তাদেরই নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না বরং বিশ্বরাজনীতিতে একটি নতুন ভারসাম্য স্থাপন করবে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক উত্তাল অবস্থা এবং নীতিগত পরিবর্তনের ফলে, ইউরোপের জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন করা একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া হতে যাচ্ছে। তবে, বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিসরে, যেখানে প্রতিটি বড় শক্তি তাদের নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষায় লিপ্ত, সেখানে ইউরোপকে অবশ্যই নিজস্ব সক্ষমতা বিকাশের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকা অপরিহার্য। ইউরোপের দেশগুলো ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সামরিক আধুনিকায়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ শুরু করেছে। যেমন, নতুন ধরনের ফাইটার জেট, ক্রুজ মিসাইল ও আধুনিক ট্যাংক—এসবের মাধ্যমে তারা নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। বিশেষ করে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য পারমাণবিক অস্ত্র ও এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারের মাধ্যমে তাদের প্রতিরক্ষা নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারছে। অনেক বিশ্লেষক বলেছেন যে, "যদি ইউরোপের দেশগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে, তবে আমেরিকা ছাড়াও তারা এমন এক সামরিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবে, যা রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।" এই মন্তব্য শুধুমাত্র সামরিক কৌশল নয়, বরং একটি নতুন আন্তর্জাতিক রাজনীতির সূচনার প্রতীক হিসেবেও নেওয়া যেতে পারে।
যদিও বর্তমান পরিস্থিতি সংকটাপন্ন মনে হলেও, ইউরোপের সামনে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে, কিছু ইউরোপীয় নেতারা ইতোমধ্যেই একটি নতুন প্রতিরক্ষা নীতির রূপরেখা আঁকতে শুরু করেছেন, যা আমেরিকা ছাড়া তাদের নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নে নিবেদিত। উদাহরণস্বরূপ, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো একত্রে একটি যৌথ সামরিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে, যেখানে আধুনিক অস্ত্রপ্রযুক্তি, ড্রোন প্রযুক্তি এবং সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি কেবল সামরিক ক্ষেত্রে নয়, বরং একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমন্বয়কেও প্রভাবিত করবে। ইউরোপ যদি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে, তাহলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে এবং এটি বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন ভারসাম্য আনতে সাহায্য করবে।
বিশ্বের বিভিন্ন নেতারা এই পরিবর্তনশীল বাস্তবতার প্রতি বিভক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। কিছু নেতারা এই পরিবর্তনকে একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখছেন, যা ইউরোপকে নিজস্ব নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। অন্যদিকে, কিছু নেতারা এই পরিবর্তনকে একটি বিপজ্জনক মোড় হিসেবে গণ্য করছেন, যা ভবিষ্যতে একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছেন যে, "ইউরোপ আজই দেখাচ্ছে যে তারা কোনও বড় সামরিক, আর্থিক বা কৌশলগত সংঘর্ষে জয়ী হতে সক্ষম।" এই মন্তব্য কেবলমাত্র ইউরোপের আত্মবিশ্বাসকে বাড়ায় না, বরং বিশ্বকে সতর্ক করে দেয় যে, এখন তাদের নতুন সময়ের প্রস্তুতি নিতে হবে। এর সাথে সাথে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও সামরিক নীতিতে পরিবর্তনগুলি ইউরোপের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। যদি আমেরিকা তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যায়, তবে ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পুনর্গঠন ও আধুনিকায়ন একটি অত্যন্ত জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া হবে। তবে, সেই সঙ্গে, এটি ইউরোপকে তার নিজস্ব ভবিষ্যতের প্রতি আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে সাহায্য করবে—একটি ভবিষ্যৎ যেখানে প্রতিটি দেশ নিজস্ব নিরাপত্তা ও সামরিক সক্ষমতার মাধ্যমে একটি সমন্বিত, শক্তিশালী ইউরোপের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।
আমেরিকা ছাড়া ন্যাটোর ভবিষ্যৎ এখন আর নিশ্চিত নয়। তবে, ইউরোপের জন্য এটি কেবল এক নতুন চ্যালেঞ্জ নয়, বরং এক বিপ্লবী জাগরণের সুযোগও বয়ে আনতে পারে। ইতিহাসের পৃষ্ঠায় যেমন দেখা গেছে, সংকট কখনও কখনও নতুন দিগন্তের সূচনা করে। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিতে, যেখানে প্রতিটি শক্তি তাদের নিজস্ব স্বার্থ রক্ষায় লিপ্ত, ইউরোপ যদি তার সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা একত্রিত করে, তাহলে তারা শুধু আমেরিকার অভাবে পড়বেন না—বরং একটি স্বাধীন, শক্তিশালী ও আধুনিক প্রতিরক্ষা নীতি গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। এই নতুন দিকনির্দেশনা শুধু ইউরোপের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়, বরং ভবিষ্যতের বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন ভারসাম্য ও শক্তির সমীকরণ। আজকের এই জাগরণই আগামীকালের ইতিহাস তৈরি করবে—একটি ইতিহাস যেখানে ইউরোপ স্বাধীনভাবে তার নিজস্ব পথ নির্মাণ করবে এবং বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। এখন প্রশ্ন জাগে—যদি ইউরোপ সত্যিই ঐক্যবদ্ধ হয় এবং তার সমস্ত সামরিক ও কৌশলগত সম্পদ কাজে লাগায়, তাহলে কি আমেরিকা ছাড়া ন্যাটো শুধু টিকে থাকবে, নাকি আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে? উত্তরে, সময়ই বলবে, কিন্তু আজকের সূচনা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট যে, ইউরোপ তার পুরোনো নিরাপত্তা নীতি থেকে বের হয়ে, নিজের শক্তির ভিত্তিতে এক নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে।
© Deshchitro 2024