সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পার্কিং ইয়ার্ডটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানাবিধ অভিযোগ জানিয়ে আসছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। ২০১৩ সালের মে মাসে এর যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি একযুগ পার হলেও ন্যূনতম সংস্কারের ছোঁয়া পড়েনি পার্কিং ইয়ার্ডটিতে। আগামি বর্ষায় এটি আদৌ ব্যবহারের উপযোগী থাকবে কিনা সেই চিন্তায় হতাশা প্রকাশ করেছেন এর ব্যবহারকারীরা। পার্কিং ইয়ার্ডের বাথরুম গোসলখানার ইজারাদার কওছার আলি জানালেন বাথরুমের দরজাগুলোর ভগ্নদশার কথা। গোসলখানায় ব্যবহারের অনুপযোগী আয়রনযুক্ত ঘোলা পানির কথা। এমনকি বহুদিন ধরে গোসলখানার চালটিও উধাও।


ভোমরা হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিস্ট্রেশন নং ১৭২২) এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ নিজাম উদ্দীন জানালেন শ্রমিকদের কষ্টের কথা। সামান্য বৃষ্টিতেই সমগ্র পার্কিং ইয়ার্ডটি ভরে যায় প্যাঁচ পেচে কাদায়। ছোট বড় বিভিন্ন গর্তে জমে থাকা সেই কাদা পানি ট্রাকের চাকায় ছড়িয়ে পড়ে ভিজিয়ে দেয় শ্রমিক কর্মচারি ব্যবসায়ীদের। খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে হয় সকলকে। রৌদ্র-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে তৈরী করা টিনশেডটিও বিভিন্ন জায়গায় নষ্ট হয়ে শ্রমিকদের লোড-আনলোডে কোন সুবিধাই দিতে পারছেনা নষ্ট হয় আমদানিকৃত পণ্য। ভোমরা স্থলবন্দরের বিশিষ্ট আমদানিকারক এসআর ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী শাহীনুর রহমান সাদ্দাম বলেন, পার্কিং ইয়ার্ডটিতে মূলত বর্ষাকালেই তৈরি হয় সমস্যার পাহাড়। শুরু হয় স্থায়ী জলাবদ্ধতার। সবখানেই গর্ত ছোট অথবা বড় কাদাপানিতে ভরা। লোড থাকা ট্রাকগুলোকে বিপদের আশঙ্কায় চলতে হয় বিশেষ সতর্কতায়। ছোট-বড় বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটে গেছে এরই মধ্যে। এ বিষয়ে ভোমরা সি এন্ড এফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা জানান, ভোমরাস্থ সকল সংগঠনকে সাথে নিয়ে ভোমরা সি এন্ড এফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন ভোমরা স্থলবন্দরের সকল সমস্যায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতেও কাজ করে যাবে। পার্কিং ইয়ার্ডের সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা করেছি। সমস্যার সমাধান দ্রুত হবে বলেই তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এই প্রসংগে ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিন শোনালেন আশার বাণী। তিনি জানালেন ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের মূল পার্কিং ইয়ার্ডটিসহ সদ্য অধিগ্রহণকৃত ও বালুভরাটকৃত নুতন পার্কিং ইয়ার্ডটিও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে নুতনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। নুতন পার্কিং ইয়ার্ডটিতে একটি ওয়্যার হাউজসহ পার্কিং ইয়ার্ড দুটির সর্বত্রই হবে আরসিসি ঢালাই। ভোমরা সাতক্ষীরা মহাসড়কের ঢালাই অংশের থেকেও এর উচ্চতা বেশি হবে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রায় ২৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন আছে। আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসেই উন্নয়ন কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে বলেই মোহাম্মদ রুহুল আমিন দৃড়ভাবে বিশ্বাস রাখেন। পার্কিং ইয়ার্ড দুটির উন্নয়ন ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের অগ্রগতিতে সূদুরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে বলেই আশায় বুক বাঁধছেন বন্দর ব্যবহারকারী সকল শ্রেণীপেশার মা

নুষ।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024