মৌলভীবাজারের বড়লেখায়  ফাল্গুনের শেষ সময়ে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত সোয়া আটটার দিকে হঠাৎ করেই এ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় ৮ থেকে ১০  মিনিটের মতো স্থায়ী ছিল এ শিলাবৃষ্টি।তারাবির নামাজ চলাকালীন সময়ে হঠাৎ শুরু হয় এ শিলাবৃষ্টি। হঠাৎ শিলাবৃষ্টির প্রচন্ড ভীতিকর শব্দে কেঁপে ওঠেন মসল্লিরা।পাশাপাশি আকস্মিক এ শিলাবৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীরা। মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায় রাস্তাঘাট। সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে বাধ্য হন।দেখা যায়,অনেকে আবার যার যার গাড়ি নিরাপদ স্থানে নিতে করছেন ছোটাছুটি। এদিকে শিলাবৃষ্টির ফলে ফসলের ক্ষতির শঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। বিশেষ করে ধান, সবজি,লেবুসহ  অন্যান্য মৌসুমি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।অন্যদিনে এলাকার অনেকের বাড়ির টিন ফুটো হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এ পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।


 মুড়িরগুল গ্রামের ফয়জুল ইসলাম জানান,শিলাবৃষ্টিতে আমার ঘরের পুরো টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে।আমি নিম্নবিও মানুষ রোজ আনি রোজ খাই।আমার ঘর পুনরায় ঠিক করতে হলে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকার প্রয়োজন। আমি হঠাৎ এই দূর্যোগের কারনে অসহায় হয়ে পড়েছি।আমার দুই ছেলে তাদের কোনো আয় রোজগার নেই।আমি দিনমজুর হিসেবে যা রোজগার করি তা দিয়েই আমার সংসার চলে।এমতাবস্থায় আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।


পৌর এলাকা থেকে গণমাধ্যমকর্মী তাহমীদ ইশাদ রিপন জানান,আকস্মিক শিলাবৃষ্টিতে শীতকালীন কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি অনেকের ঘরবাড়ির টিনের চালা ফুটো হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।এছাড়া তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।


মোহাম্মদ নগর গ্রামের গণমাধ্যমকর্মী শাহরিয়ার শাকিল জানান,আমাদের এলাকায় পৌর শহরের এলাকা গুলো থেকে কম শিলাবৃষ্টি হয়েছে তাই অন্যান্য এলাকা থেকে আমাদের এলাকায় কম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


মুছেগুল গ্রামের ফরহাদ জানান,আমাদের এলাকার অনেক মানুষের টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে।পাশাপাশি ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।বিশেষ করে যারা টমেটো, কাচামরিচ,লেবু, বেগুন সহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতি হয়েছে।


পানিধার গ্রামের মাহফুজ জানান,আমরা নামাজে ছিলাম,হঠাৎ ভয়ানক শব্দে কেঁপে উঠি।নামাজ শেষে দেখি প্রচন্ড শিলাবৃষ্টি। চারিদিকে শুধু বরফের পাথরে বিস্তীর্ণ। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেকের বাড়ির টিনের চালা ফুটো সহ ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


দরগাবাজার এলাকার রিন্টু স্যার জানান,হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।আমাদের আশেপাশের অনেকের বাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়েছে।তাদের আর্থিক অবস্থা তেমন একটা সচ্ছল না।তারা অনেক বিপাকে পড়েছে।


দক্ষিণভাগ থেকে গণমাধ্যমকর্মী আফজাল হোসেন রুমেল জানান, শিলাবৃষ্টি ও প্রচন্ড ঝড়ো বাতাসে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি সহ এলাকার অনেকেরই ঘরবাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়েছে।এছাড়া তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।


বড়লেখা উপজেলার কৃষি অফিসার মনোয়ার হোসেন জানান,হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার প্রায় ৫ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।তবে কৃষকরা শীতকালীন সবজি অনেকটাই তুলে ফেলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে।যারা শীতকালীন সবজি দেরিতে রোপন করেছেন তারা একটু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।বিশেষ করে ভুট্টা, শশা,টমেটো, কাচামরিচ এগুলা এখনো জমিতে আছে, এসব ফসলের অনেকটা ক্ষতি হয়েছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024