জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ভাইকে ফাঁসাতে আ'লীগের নেতাকে বাদী করে থানায় মামলার অভিযোগ উঠেছে বোনের বিরুদ্ধে । গত ১০ মার্চ উপজেলার দাশড়া শেয়ালাপাড়া গ্রামের আঃ মজিদ সরদারের মেয়ে মজিদা উম্মে আম্মারা এই মামলাটি করেন। জানাগেছে, ভাই বোনের মধ্যে জমি জমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। ওই জমি দখল নিতে দু'পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান করছিল। পুলিশ  ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রনে আনে।  পরে মজিদা স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতাকে বাদি করে  ইউনিয়ন বিএনপি আহ্বায়ক ভাই ওয়ারেছুল মজিদসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে তিন লক্ষ টাকা চাঁদাদাবি, সোনার গহনা ছিনতাই ও হত্যার চেষ্টা মামলা করেছেন। ওই আ'লীগ নেতার নাম আনোয়ার পারভেজ রিংকু।


সে ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি। সরেজমিনে জানাগেছে, উপজেলার আটি মৌজার হাজী হাড়ী সরদার ওয়াক্ফ এষ্টেটের মুতোয়াল্লি ওয়ারেছুল মজিদ ও তার বোন মজিদা উম্মে আম্মারার সঙ্গে জমি জমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলছিল। এনিয়ে আদালত ও থানায় একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের আদেশ অমান্য করে বর্তমান ইরি মৌসুমে ওই জমি দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিল বোন মজিদা। এঘটনায় গত ৬ মার্চ ফৌজদারি আদালতে ওই মতোয়াল্লী ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করে। আদালত আইন শৃংঙ্খলা বজায় রাখতে ক্ষেতলাল থানাকে আদেশের কপি পৌঁছে দেয়। অজানা কারণে পুলিশ বিবাদীকে ১৪৪ ধারার নোটিশ জারী না করায় গত ১০ মার্চ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে বোন মজিদা উম্মে আম্মারা লোকজন নিয়ে ধানের চারা রোপন করতে যায়।

ওই সময় মুতোয়াল্লি ওয়ারেছুল মজিদ জমি রোপণ করতে নিষেধ করলে বোন আম্মারা লোকজন উঠিয়ে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর ক্ষেতলাল থানার দুইজন এসআই আজিজুল ও  ফারুককে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা উভয় পক্ষকে ডেকে ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করে বলে বিরোধপূর্ণ এই জমিতে ১৪৪ ধারা রয়েছে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। এসময় ঘটনাস্থলে স্থানীয় একজন ইউপি সদস্য, এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মারামারি, ছিনতাই বা চাঁদাদাবির মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। ওই সময়ের সম্পূর্ণ ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। সেখানে বাদী আনোয়ার পারভেজ রিংকু উপস্থিত ছিলেন না। অথচ তিনি ওই মামালার এজাহারে উল্লেখ করা লোহার রড, বাঁশের লাঠি, সোনার গহনা চুরি ও চাঁদা দাবি এসব মিথ্যা অভিযোগ এনে উপজেলার তুলসীগঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সহ ওই এলাকার ১৮জনকে আসামী করে থানায় একটি মিথ্যা মামলা করেছেন।

প্রকৃত ঘটনার সমস্ত ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। এবিষয়ে মতোয়াল্লি ওয়ারেছুল মজিদ বলেন, ওয়াক্ফ এস্টেটের জমি আমার বড় বোন মালিকানা দাবি করে একাধিকবার দখলের চেষ্টা করে। ওই সম্পত্তি স্থিতবস্থায় রাখতে আদাল ১৪৪ ধারা জারি করে। আদালতের ওই আদেশ জারি করতে প্রথমে ক্ষেতলাল থানার এসআই সঞ্জয়কে দায়িত্ব দেয়। সে বলে আমার দুইজন আছি। কত দিবেন বলেন? আমি বলি ১০ দিব। সঞ্জয় বলেন আমারই'ত ১০ লাগবে এসআই রাকিবকে কত দিবেন? তাদের সথে সমঝোতা না করাই। তারা আমার বোনকে উস্কে দিয়ে নিরীহ মানুষ গুলির উপরে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। থানা বলছে উপরে ডিআইজির চাপে মামলাটি গ্রহন করেছি আপনারা ভাই বোন মিলে আপোষ করে নেন।


এ বিষয়ে এসআই সঞ্জয় বলেন, কে কি বলে, বলুক, আমি তো আর টাকা নেইনি। স্থানীয় দাসড়া গ্রামের মমিন মেম্বার বলেন, থানা পুলিশ কোন কিছু তদন্ত না করে মিথ্যা একটি ঘটনায় মামলা নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। মামলারবাদি আনোয়ার পারভেজ রিংকু ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও মামলার বাদি হলেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন হ্যাঁ আমি বাদি হয়েছি।


ওই দিন কি ঘটেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছুই জানিনা। বলে ফোন কেটে দেয়। এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহবুবর রহমান সরকার। তাকে মোবাইল ফোনে না পেয়ে। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও এমামলার বিষয়ে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024