স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ফিস্ট মিলের আয়োজন করা হয়। তবে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ মো. হারুনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ইফতারের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, ফিস্ট মিলের জন্য প্রশাসন শিক্ষার্থীপ্রতি ১৭০ টাকা বরাদ্দ দেয়, পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আরও ৫০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু প্রত্যাশিত মানসম্পন্ন খাবার না পাওয়ায় এবং অন্যান্য হলের তুলনায় নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

টাকা অনুযায়ী খাবারের মান নিম্নমানের হওয়ায় ইফতারের সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন হল প্রাধ্যক্ষ। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সাথে তিনি বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "তিনি মূলত টাকা মেরে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন, নয়তো তাঁর ওপর কেউ চাপ সৃষ্টি করেছে। অন্য হলগুলো যেখানে ভালো খাবার পরিবেশন করতে পারছে, সেখানে নজরুল হলে কেন বৈষম্য করা হলো? বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমন অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না।"

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সোয়াইব হোসেন আল-আমিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন,"হলের ইফতারের বাজেট থেকেও আপনাদের টাকা খেতে হয়? লজ্জা নজরুল হল প্রশাসন!"

আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী সাদির বলেন,"স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর নির্দিষ্ট বাজেটে ইফতারের আয়োজন হয়। কিন্তু এবারের খাবারের মান এতটাই নিম্ন ছিল যে, হলের ইতিহাসে এমন বাজে খাবার আমরা আগে খাইনি। অথচ অন্যান্য হলে ভালো খাবার দেওয়া হয়েছে। প্রাধ্যক্ষ দাবি করছেন, ১৫ হাজার টাকা বেঁচে গেছে, যা ঈদের পর বিশেষ খাবারের জন্য রাখা হবে। কিন্তু এই অর্থ তো আজকের খাবারের জন্য বরাদ্দ ছিল! এটি কীভাবে অন্য খাতে স্থানান্তর করা হলো?"

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন,"আমি বাকি চারটি হলে ভিজিট করেছি, কিন্তু এই হলের অবস্থা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। কী ঘটছে, তা আমি দেখছি। আগামীকাল তোমরা আমার সাথে দেখা করো।"

অন্যদিকে, হল প্রাধ্যক্ষ মো. হারুন বলেন,"আমরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইফতারের আয়োজন করেছি। ভেবেছিলাম, অতিরিক্ত ভর্তুকি দিতে হতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকা বেঁচে গেছে। এই টাকা ঈদের পর শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজনে ব্যয় করা হবে।"

তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ঈদের পরের খাবারের অজুহাতে আজকের ইফতারের মান কমিয়ে দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য ছিল। এটি মূলত বাজেট আত্মসাতেরই একটি কৌশল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024