জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ফরিদ উদ্দিন (৬০) ওরফে টাহি মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।  


আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে ইসলামপুর থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল আদালতে পুলিশ টাহি মণ্ডলকে সোপর্দ করলে সংশ্লিষ্ট বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 


অভিযুক্ত টাহি মণ্ডল সম্পর্কে ভুক্তভোগী শিশুটির দাদা হন। টাহি মণ্ডলের বাড়ি উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের ফুলকারচর দক্ষিণপাড়া গ্রামে। ভুক্তভোগী ওই শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা বাদী হয়ে অভিযুক্ত টাহি মণ্ডলকে আসামি দিয়ে ইসলামপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে, অভিযুক্ত টাহি মণ্ডল মানসিক রোগী। 


মামলা সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগী শিশুটি বাড়ির পাশে ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে যায়। এসময় আগে থেকে উৎপেতে থাকা টাহি মণ্ডল ওই শিশুকে জাবড়ে ধরে সেখানে একটি কলা গাছের আড়ালে নিয়ে ধর্ষণ করে। শিশুটির ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকলে, সেখান থেকে সটকে পড়ে ধর্ষক টাহি মণ্ডল। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে স্বজনরা পার্শ্ববর্তী শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে শিশুটি সেখানে চিকিৎসাধীন। 


পরে গোপন খবরের ভিত্তিতে দুপুরের দিকে ইসলামপুর থানার সেকেন্ড অফিসার ও উপপরিদর্শক (এসআই) মো.শামছুজ্জামানের নেতৃত্বের পুলিশের একটি দল পার্শ্ববর্তী ডাকপাড়া গ্রামে থেকে অভিযুক্ত টাহি মণ্ডলকে আটক করে। অভিযুক্ত ধর্ষক টাহি মণ্ডলের বসতবাড়ি থেকে তিনটি গরু নিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা নিয়ে গেলে, খবর পেয়ে পুলিশ গরুগুলো উদ্ধার করে ফেরত দিয়েছে।


গাইবান্ধা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাহাদুর আলম বেপারী বলেন, 'ধর্ষণে অভিযুক্ত টাকি মণ্ডল মানসিক রোগী। এলাকাবাসী তাকে পাগল বলে ডাকে।'


মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ রব্বানী বলেন, 'অভিযুক্ত ধর্ষক টাহি মণ্ডলের বসতবাড়ি থেকে তিনটি গরু বিক্ষুব্ধ জনতা নিয়ে ছিলো। পরে খবর পেয়ে  গরুগুলো উদ্ধার করে ফেরত দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত টাহি মণ্ডল মানসিক রোগী বলে মনে হয়নি।'


ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, 'নয় বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলা করার আগে আমরা অভিযুক্ত টাকি মণ্ডলকে আটক করেছি। ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক টাহি মণ্ডলকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।'


জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল আদালতের অধীন ইসলামপুর আমলি আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তার (জিআরও) মো. ফারুক হোসেন বলেন, 'আসামি টাহি মণ্ডলকে জামালপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।'


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024