‘ইতিকাফ’ আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো অবস্থান করা, আবদ্ধ রাখা। ইসলামি পরিভাষায় ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন, তাঁকে ‘মুতাকিফ’ বলে। ইতিকাফ একটি বিশেষ ইবাদাত। ইতিকাফের মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যায়। রমজানের শেষ দশক তথা ২০ রমজান সূর্যাস্তের পূর্ব থেকে ঈদের চাঁদ তথা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া বা ৩০ রমজান পূর্ণ হয়ে ওই দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত (৯ দিন বা ১০ দিন)। ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ কিফায়াহ। ইতিকাফের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো শবে কদর লাভ করা। রমজানের শেষ দশক ইতিকাফ করলে শবে কদরপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। ইতেকাফ অবস্থায় ইতেকাফকারী সার্বক্ষণিক নামাজের সওয়াব পেয়ে থাকেন। যেহেতু মসজিদ আল্লাহর ঘর, সেহেতু ইতেকাফকারী আল্লাহর প্রতিবেশী বা আল্লাহর ঘরের মেহমান হয়ে যান। ইতেকাফের ফজিলত অনেক বেশি। ইতেকাফ অবস্থায় মানুষ আল্লাহর সম্মুখে এমনভাবে হাজির হয়ে থাকে যে, দুনিয়ার কোনো কিছুর প্রতিই তার খেয়াল থাকে না। তিনি তখন মৃত ব্যক্তির মতোই নিজেকে আল্লাহর ওপর সঁপে দেন। মানুষ যতক্ষণ ইতেকাফ অবস্থায় থাকে ততক্ষণ তার প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদত হিসেবে লেখা হয়। তার ঘুম, খাওয়া-দাওয়া, প্রতিটি নড়াচড়া পর্যন্ত ইবাদতে গণ্য হয়। হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করবে সে দুটি ওমরাহ ও দুটি হজ আদায় করার সওয়াব পাবে। হজরত আয়েশা (রা.) আরো বলেন, ‘নবী করিম (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ পালন করতেন। তাঁর ওফাতের আগ পর্যন্ত তিনি ইতেকাফ পালন করে গেছেন। তারপর তাঁর পত্নীরাও তা পালন করেছেন। অন্য এক হাদিসে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি একদিন ইতেকাফ করে আল্লাহপাক তাঁর এবং জাহান্নামের মধ্যে তিন খন্দক দূরত্বের ব্যবধান রাখবেন। এই দূরত্ব হবে আসমান ও জমিনের দূরত্বের চেয়েও অধিক। তাই আল্লাহ তায়া’লা আমাদের জীবনে একবার হলেও ইতিকাফ করার তৌফিক এনায়েত করুক। সাকিবুল হাছান ঢাকা কলেজ, ঢাকা
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024