গত দেড় যুগে সুন্দরবনে ২৭ বার অগ্নিকাণ্ড পরিবেশবিদদের ভাবিয়ে তুলছে।তবে কি কোন ষড়যন্ত্র। সরকারী তদন্ত করে কার্যকরি পদক্ষেপ না নিলে ওখানে বন উজাড় করে হয়তো বসতি গড়ার জন্যেই এই পায়তারা।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের দুই এলাকার পৃথক দুটি অগ্নিকান্ডে সাড়ে ৫ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফারির টেপারবিল এলাকার দেড় একর এবং ধানসাগর টহল ফারির তেইশের ছিলা-শাপলার বিল এলাকার ৪ দশমিক শূন্য ৫ একর বনভূমি রয়েছে। 

বুধবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

জানাযায়, টেপারবিল ও তেইশের ছিলা-শাপলার বিল এলাকার বেশিরভাগ গাছ ৮০ শতাংশ গাছ শুকিয়ে গেছে। বেশকিছু বড় সুন্দরী গাছের পুরে যাওয়া গোড়ার অস্তিত্ব দেখা যায় তেইশের ছিলা-শাপলার বিলে। ধারণা করা হচ্ছে আগুনের তাপে শুকিয়ে যাওয়া এসব গাছ দ্রুতই মারা যাবে। সুযোগমত স্থানীয় দুষ্টু লোকেরা এসব গাছ কেটে নিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করবেন।এসব অগ্নিকাণ্ড একটি স্বার্থান্বেষী মহল গত কয়েক বছর ধরে সংঘটিত করে আসলেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।

ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, ঘটনাস্থলে স্থানে এখন কোন আগুন নেই। আগুন সম্পূর্ণরুপে নির্বাপন হয়ে গেছে। তারপরও অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য জোয়ারের সময় পানি ছিটানো হচ্ছে। আগামীকালও পর্যবেক্ষন করা হবে। তারপর ফায়ার আউট ঘোষনা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, পরপর দুটি এলাকায় আগুন ধরার কারণে আমাদের কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। আমরা দুটি স্থান ড্রোন ও জিপিএসের মাধ্যমে মনিটরিং করেছি। আপতত সাড়ে ৫ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জিপিএসের মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়েছে। এছাড়া দুটি ঘটনায় আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করবে। তখন ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

শনিবার সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী বন টহল ফাঁড়ির টেপার বিলে আগুন লাগে। রাতভর চেষ্টায় রবিবার সকালে সেই আগুন নেভাতে সক্ষম হয় বন বিভাগ ও র্ফায়ার সার্ভিস হয়।সুপ্ত আগুন ও ধোয়ার কুন্ডলী খুজতে বন বিভাগ ড্রোন ব্যবহার করে। তখন কলমতেজী এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা-শাপলার বিলে আগুনের অস্তিত দেখতে পায় বন বিভাগ।সেই আগুনে সুন্দরবন পুড়েছে ৪৮ ঘন্টার বেশি সময় ধরে। অবশেষে মঙ্গলবার বিকেলের দিকে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস আগুন সম্পূর্ণ রুপে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য বুধবার ও বৃহস্পতিবার ওই এলাকা পর্যবেক্ষনে রাখে বন বিভাগ। এই সময়ে পানিও ছেটানো হয় বনের মধ্যে।

তবে পরিবেশবিদরা ধারনা করছে সুন্দবনের একই জায়গায় গত দেড় যুগে ২৭ বার অগ্নিকাণ্ড কোন সাধারণ ব্যপার না।এটি কোন দুষ্টচক্র দ্বারা সংঘটিত হতে পারে।সরকারের উচিত সুন্দরবন বাঁচাতে এসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024