বরিশালের মুলাদী উপজেলা আওমী লীগ নেতা আব্বাস হাওলাদারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটানা ঘটে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভাংচুর ও ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলায় আহত সাংবাদিক এন আমিন রাসেল ও মনিরুল ইসলামকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- বৃহস্পতিবার বরিশাল চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ছিনতাই ও হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি মুলাদি উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্বাস জামিনে মুক্ত হন। আওয়ামী লীগ নেতার জামিনের সংবাদ পেয়ে আদালতের সামনে জড়ো হতে থাকে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের জড়ো হওয়ার খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আব্বাস কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের সহযোগীতায় পুলিশের গাড়িতে করে আদালত থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় এন আমিন রাসেল ও মনিরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহ করতে যায়। তথ্য সংগ্রহ করে ফিরে যাওয়ার সময় আদালতের সামনে এন আমিন রাসেল ও মনিরুল ইসলামের উপর হামলা করে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ নেতা আব্বাসকে বাঁচাতে পুলিশের সাথে সাংবাদিকদেরও হাত আছে এমন অভিযোগ তুলে সাংবাদিকদের উপর হামলা করা হয়, ভাঙচুর করা হয় ক্যামেরা, আগুন দেয়া হয় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলে।অভিযোগ রয়েছে- বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান ও ওসি (অপরেশন) গাজী মিজানুর রহমানের নির্দেশেই আওয়ামী লীগ নেতা আব্বাসকে পুলিশের গাড়িতে করে আদালত থেকে বের করার চেষ্টা করা হয়। আদালতের সামনে যখন সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা চলছিলো ঠিক সেই মুহুর্তে কোতয়ালী থানা পুলিশ আওমামী লীগ নেতা আব্বাসকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলো। সাংবাদিকদের উদ্ধারে কোন ভূমিকা রাখেননি পুলিশ। এদিকে সাংবাদিকদের উপর হামলার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বরিশালের সর্বস্থরের সাংবাদিকরা। এ সময় সড়ক অবরোধ করে হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানানো হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা তাদের কর্মসূচী প্রত্যাহার করে।জামিনে মুক্ত হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকে পুলিশের গাড়িতে করে আদালত থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টার বিষয়টি কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্ন করলে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।ঘটনার বিষয় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন- একটি গণতান্ত্রিক দেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা না থাকলে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমও থাকবে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি করছি।বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন- সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। আমরা ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং এ বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024