
ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার জার গ্রামে বসবাসকারী ছোট্ট শিশু মিম আক্তার। পড়াশোনা চতুর্থ শ্রেণীতে। তাঁর জীবনের স্বপ্নকে তুলে ধরে বলেন, “আমি বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই, কিন্তু কবরস্থানে বসবাস করতে ভয় করে।”
মিমের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে আসছিল। তার বাবা-মা দুজনই মানসিক ভারসাম্যহীন, ফলে পরিবারটি নানা কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছে। মিমের কাকা তার কেনা ২শতক জমি মিমির বাবা তোতো মিয়াকে দান করেন, কিন্তু সে জমি অবস্থিত কবরস্থানের ভিতরে। এই জমিতে তৈরি করা হয়েছে একটি ছোট টিনের ছাপড়ার ঘর, যেখানে আলোর বা বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা নেই।
চারপাশে কবরস্থান হওয়াতে, মিমের পরিবারকে বাঁশ ও জঙ্গল ঘেরা পরিবেশে থাকতে হয়। তার বাবা প্রায় সময় রাতের বেলা বাইরে থাকেন, আর মিম ও তার মা ভয়ের কারণে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। মিমির মা বলেন, "রাতে পোকামাকড় এবং জীবজন্তু বের হয়ে আসে। কবরস্থানে থাকায় ভয়ের কারণে আমরা রাতে ঘর থেকে বের হতে পারি না।"
মিমের মা আরও জানান, ছোট এই ভাঙা ঘরে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছে। অল্প বৃষ্টি হলেই, ঘরে পানি পড়ে, আর তখন থাকার জায়গা থাকে না। টয়লেটের কোনো ব্যবস্থা না থাকায়, প্রতিবেশীর বাড়িতে বা আশেপাশের জঙ্গলে যেতে হয়। রাতে ভয়ের কারণে বাইরে বের হওয়া সম্ভব হয় না।
মিম জানান, "আমার বাবা-মা দুজন মানসিক ভারসাম্যহীন। আমার বাবা তেমন কাজ করতে পারে না। বাজারে পানি টানে, এটা-সেটা করে, কিন্তু মানুষ তেমন টাকা দেয় না। ঈদে অন্যরা সেমাই, মিষ্টি খায়, নতুন জামাকাপড় পরে, কিন্তু আমাদের এক টুকরো ভালো খাবার বা জামা থাকেনা।"
এই পরিবার খুব কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছে। তাদের এখন একটি ঘর এবং টয়লেটের প্রয়োজন। সমাজের বিত্তবানদের কাছে বিনীতভাবে সাহায্যের আবেদন জানানো হচ্ছে।