বিপুল দেব রায় : ঈদ আসে ঈদ যায়। তবে প্রতিবছর কোনো না কোনো পরিবারের কাছে ঈদ আনন্দ হয়ে ওঠে এক বিভীষিকাময়। এবারও ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে গিয়ে সারাদেশে দুর্ঘটনার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান- পঙ্গু হাসপাতালের হিসেব অনুযায়ী ২৮ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এক হাজার ৯৯০ জনের মধ্যে এক হাজার ৮৫ জনই সড়ক দুর্ঘটনার রোগী। এর মধ্যে ঈদের দিনই সর্বোচ্চ ১৪৭, পহেলা এপ্রিল ২১৩ এবং ২ এপ্রিল ১৯৮ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এছাড়া, ২৮ মার্চ ১১৭ জন, ২৯ মার্চ ৯৬ জন, ঈদের আগের দিন ১১৫ জন, ৩ এপ্রিল ১২৭ ও ৪ এপ্রিল বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৭২ জন সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎিসা সেবা দেওয়া হয়েছে। 


হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ রোগীর বলছেন, অদক্ষ চালক ও বেপরোয়া গতির কারণে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা বলেন, ট্রাফিক আইন না মেনে অনেকে গাড়ী চালান। এছাড়া, ওভারটেকিং করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। কম বয়সী তরুণদের মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ারও অনুরোধ করনে অনেকেই। 


পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, এবার ঈদের ছুটিতে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। অধিকাংশ রোগী মৃত্যুবরণ করেছে, সেই সাথে হাত পা ভেঙ্গেছে অধিক রোগী। এরপরে রয়েছে, বাস, ট্রাক, নসিমন সহ অন্যান্য যানবাহনের।


এবছর পুরুষের পাশাপাশি অধিকাংশ হারে মহিলা রোগী ভর্তি হয়েছে জানিয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. ইরাম শাহরিয়ার জানান, বাস-ট্রাকের চেয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার রোগীর সংখ্যা বেশি। তিনি বলেন, অল্প বয়সী চালক ও তরুণ রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত আট দিনে ১হাজার ৯৯০ জন রোগীর মধ্যে ১ হাজার ৮৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সচেতন হওয়া ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধের কোন বিকল্প নেই বলে জানান তিনি। 


প্রতিবছর সড়কে প্রাণ ঝড়ে হাজারো মানুষের। তারপরও সংশ্লিষ্টদের টনক নরে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024