অবৈধ ভাবে অন্যের জমি দখলই যেনো শফিকুল ইসলাম মাস্টারের নেশা। পাঁচলিয়া গ্রামের মৃতঃ জসমত আলীর ছেলে শফীকুল ইসলাম মাস্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে সরকারি নিয়ম ভঙ্গই যেন তার কাজ।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় পাচিলা মৌজার আর এস ২০ নং খতিয়ান ভুক্ত আর এস দাগ নং – ৪৭০ মোট জমির পরিমান .৭১ শতক যাহার রেকর্ডিয় ওয়ারিশগণ পুত্র আজাহার আলী ও শাহজাহান আলী সর্ব পিতা মৃতঃ নাজেম আলী সরকার প্রাপ্ত অংশ .২৮৬ পয়সা , ও ৩.২৮৫ পয়সা এবং কন্যাগণ শরিফন নেসা বিবি জং মৃতঃ সাহেব আলী, মাজেদা খাতুন বিবি, জং মূত নুর হোসেন, সাজেদা খাতুন জং মৃতঃ মজিবর রহমান, প্রত্যেকের প্রাপ্ত অংশ – ১৪৩ পয়সা যাহার মুসলিম ফারায অনুযায়ী প্রতেক ভাই প্রাপ্ত অংশ ২০.৩০৮ শতক এবং প্রত্যেক বোন ১০.১৫ শতাংশ ভুমি।


পাঁচিলা মৌজার জে এল -৫২ আর এস খতিয়ান নং – ৪৭০ দাগের  মোট .৭১ শতক ভুমি যাহার মধ্যে পশ্চিম অংশ হতে খলিল ৭/৫/২০০৬ ইং তারিখে ২৭০৮ নং দলিলে  শাহজাহান আলীর নিকট হতে ২৪ শতাংশ জমি ক্রয় করে। ৯/৫/২০০৬ ইং তারিখে ২৮২০ নং দলিলে ৪৭০ নং দাগের .৭১ শতকের মধ্য ছাহাম হতে আবদুল মজিদ ১২ শতক জমি ক্রয় করে, একই দলিলে আবারও আবদুল মজিদ ৪৭০ দাগের .৭১ শতকের মধ্য ছাহাম হতে ১৫/৯/২০২১ ইং তারিখে ৩৫৩২ নং দলিলে ওয়ারিশ সোহেল রানা, ময়না খাতুন, ফাল্গুনি, রূম্পা, সাহানাজ সর্ব পিতা মৃত কাইয়ুম সরকার, রাবেয়া খাতুন স্বামী মৃতঃ কাইয়ুম সরকার, এর নিকট হতে ১০.১৫ শতক জমি ক্রয় করেন । ৮/৫/২০০৬ ইং তারিখে দলিল নং ২৮২১ সাজেদা খাতুন স্বামী মৃতঃ মজিবর রাহমান পিতা মৃতঃ নাজিম উদ্দিন ৪৭০ নং দাগের .৭১ শতকের মধ্য ছাহাম হতে .১০ শতক জমি ছেলে রেজাঊল করিমকে দলিল করে দেন। পাঁচিলা মৌজার ২০ নং খতিয়ানের ৪৭০ নং দাগের .৭১ শতক  আর এস রেকর্ডিয় সম্পত্তি মাজেদা বেগম, স্বামী মৃতঃ নুর হোসেন, পিতা মৃতঃ নাজেম আলী সরকার মাতা, মৃতঃ মানিকজান, এর নিকট হতে মোঃ জিন্নাহ ফারুক, পিতা মৃতঃ সাইদুর রহমান, আমশড়া, সলঙ্গা, সিরাজগঞ্জ, ১৭/৮/২০২১ ইং তারিখে দলিলমূলে ক্রয় করেন, যাহার খারিজ খতিয়ান নং-৯৬৯, জে এল নং -৫২ ,হোল্ডিং নং – ৯৭৫, হালসনের খাজনা হালনাগাদ।


উক্ত জমিতে শফিকুল ইসলাম মাস্টার জোর পূর্বক অবৈধভাবে এক খানা টিনের ঘর নির্মাণ করে, সরকারি উন্নয়নের জন্য চার লেনের রাস্তা প্রশস্ত করনের উক্ত জমির হাফ শতক সরকারি উন্নয়ন কাজের জন্য অধিগ্রহন করে। উক্ত টাকা উত্তোলনের জন্য জিন্নাহ ফারুক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভুমি অধিগ্রহন শাখায় আবেদন করে, শফিকুল ইসলাম মাস্টার উক্ত দাগের টাকা প্রাপ্তির আবেদন দাখিল করে। জেলা প্রশাসক , অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ভুমি অধিগ্রাহন কর্মকর্তা, কানুনগো, সার্ভেয়ার উভয় পক্ষের মূল কাগজপত্র ফিরিস্তি আকারে জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করে। নোটিশ পাওয়ার পরে জিন্নাহ ফারুক ফিরিস্তি আকারে সকল মূল কাগজ পত্র ভুমি অধিগ্রহন শাখায় জমা প্রদান করে। পক্ষান্তরে শফিকুল ইসলাম মাস্টার এর বৈধ কোন কাগজ না থাকায় তাকে ক্ষতিপূরণের কোন টাকা প্রাপ্য হয়নি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ২৫/৫/২০২২ ইং তারিখে ১,৫৮,৬০৬/৬৪ সি জি এ চেকের মাধ্যমে ভুমি অধিগ্রহন  শাখা হতে জিন্নাহ ফারুককে উক্ত টাকা প্রদান করে। 

এমতাবস্থায় জিন্নাহ ফারুকের ক্রয় করা নিজ জমিতে সাইনবোর্ড লাগাতে গেলে ১৯/৯/২০২১ ইং তারিখে শফিকুল ইসলাম মাস্টার (৫০) নজরুল ইসলাম (৬০) মেহেদী হাসান সুজন (৩০) সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে এবং প্রাননাশের হুমকি প্রদান করে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জিন্নাহ ফারুক সলঙ্গা থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করে যার জিডি নং- ১০৬৭/২১ ।

সলঙ্গা থানার এস আই শরিফুল ইসলাম বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করেন  এবং শফিকুল ইসলাম মাস্টারের উক্ত জমিতে কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাকে অবৈধ দখলদার হিসেবে চিন্হিত করে রিপোর্ট দাখিল করেন।

পরবর্তীতে জিন্নাহ ফারুক ১৯/২/২০২২ ইং তারিখে উক্ত জায়গায় এলাকার গণ্যমান্য বাক্তি ও সকল শ্রেনী পেশার মানুষ নিয়ে সামাজিক শালিস বৈঠকের আয়োজন করে, উক্ত বৈঠকে উভয় পক্ষের মূল কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়, জিন্নাহ ফারুকের সকল মূল কাগজপত্র জমা দিলেও শফিকুল মাস্টারের কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাকে অবৈধ দখলদার হিসেবে ঘোষনা করে এবং উক্ত দাগের জায়গা হতে অবৈধ ভাবে নির্মিত টিনের ঘরটি সরিয়ে নিতে বলা হয়।

জিন্নাহ ফারুকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মোঃ মাসুদ রানা ভুমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা, সিরাজগাঞ্জ, উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ১৪/৪/২০২২ ইং তারিখে শফিকুল ইসলাম মাস্টারকে অবৈধ দখলদার হিসেবে চিন্হিত করে চিঠি প্রদান করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। জহুরুল ইসলাম পিতা মৃত জসমত আলী পাচিলা  ১২/৫/২০২৪ ইং তারিখে পাচিলা ভুমি অফিসে উক্ত দাগের উপরে খারিজের আবেদন করে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় এবং জমির স্থিতি না থাকায় আবেদনটি নামঞ্জুর এবং মামলা নিস্পত্তি হিসেবে গণ্য হয় ।

এ বিষয়ে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন ভুমি অফিসের ভুমি কমকর্তা বেলাল হোসেন বলেন শফিকুল ইসলাম মাস্টার এবং তার ভাই জহুরুল ইসলাম উক্ত জমির কোন মালিকানা ওয়ারিশ না হওয়ায়, এবং জমির স্থিতি না থাকায় তাদের নামজারি আবেদন টি এসিল্যান্ড অফিস হতে বাতিল করা হয়। ভুমি সহকারি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান আমি হাটিকুমরুল ভূমি অফিসে কর্মরত থাকা অবস্থায় শফিকুল ইসলাম মাস্টার উক্ত দাগের কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি, হাটিকুমরুল ইউনিয়ন ভূমি কমকতা মঈন উদ্দিন জানান হাটিকুমরুল ভূমি অফিসে কমরত থাকা অবস্থায় শফিকুল ইসলাম মাস্টার নামজারি আবেদনের করে, যাচাই বাছাই করে তার কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় আবেদন টি বাতিল বলে গন্য হয়।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ছানোয়ার হোসেন বলেন জিন্নাহ ফারুকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জিন্নাহ ফারুকের কাগজের বৈধতা পাওয়া যায় অপর দিকে শফিকুল ইসলাম মাস্টারের বৈধ কোন কাগজ পত্র না থাকায় তাকে জিন্নাহ ফারুকের বৈধ জায়গা ছেড়ে দিতে বলা হয়।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024