দিনাজপুরে পারিবারিক কলহ ও যৌতুকের দাবিতে মোছাঃ ফারহানা (১৯)নামের এক যুবতীকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন তার স্বামী মোঃ সোনা বাবু(২৫)।"কথায় আছে "পান থেকে চুন খসলেই" স্ত্রীর সাথে করে অমানবিক আচরন।
এমনকি তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ করেন ফারহানার বাবা মোঃ ফরিদুল ইসলাম।
ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুর সদর উপজেলার ১০নং কমলপুর ইউনিয়নের মাকিহারি গ্রামে ।
এ ঘটনায় শনিবার (৫ এপ্রিল) নির্যাতিতা ফারহানার বাবা মোঃ ফরিদুল ইসলাম বাদী হয়ে তার স্বামী সোনাবাবু , মা মোছাঃ আঞ্জুয়ারা বেগম,বাবা মোঃএসলাম ,বড় ভাই মোঃ আরিফ বাবু ও ভাবী মোছাঃ রুনা বেগমকে অভিযুক্ত করে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ।
দায়েরকৃত অভিযোগসুত্রে জানা যায় গত ২০২১ সালে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯নং আশকরপুর ইউনিয়নের দক্ষিন গোবিন্দপুর এলাকার মোঃ ফরিদুল ইসলামের মেয়ে ফারহানার সাথে ১০নং কমলপুর ইউনিয়নের মাকিহারি গ্রামের মোঃ এসলামের ছোট ছেলে মোঃ সোনা বাবুর সাথে পূর্ব সম্পর্কের সুত্র ধরে তিন লক্ষ টাকা দেন মোহর ধার্য করে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়।বর্তমানে তাদের ঘড়ে মোঃ ফারহান নামে দুই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।কিন্তু বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই ফারহানার স্বামী সোনাবাবু তার পরিবারের প্ররোচনায় ৫লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।মাঝে মধ্যেই সোনাবাবু নেশা করে আসে আর টাকার জন্য অন্যায় চাপ সৃষ্টি করে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল ।একই ঘটনার জের ধরে গতকাল(৪মার্চ )সকাল সাড়ে এগারোটায় আবারও যৌতুক বাবদ ৫লাখ টাকা দাবী করলে ফারহানা যৌতুকের টাকা দেয়া সম্ভব নয় বলে জানালে তার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে তার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে বাঁশের লাঠি নিয়ে এলোপাথাড়ি শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে কালশিরা জখম করে এমনকি দুহাতে গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে সে মারা গেছে মর্মে সোনাবাবু ফারহানার পরিবারকে খবর দেয় ।খবর পেয়ে ফারহানার মা ,বাবা ও পরিবারের লোকজন দ্রুত ফারহানার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ফারহানাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় ।ঐ সময় ফারহানার নানা ও তার পরিবারের লোকজন মৌখিক প্রতিবাদ করলে তাদের সাথেও খারাপ আচরণ করে সোনাবাবু বলে উল্লেখ করেন ।
দিনাজপুর মেডিক্যালে ভর্তি ফারহানা বলেন আমার স্বামী নেশাগ্রস্থ ও মাদক ব্যবসায়ী ।তার পরিবারের লোকজনও অবৈধ মাদক ব্যবসার সাথে ।আমার স্বামী সোনাবাবু মাঝে মধ্যেই নেশা করে আসে আর আমার উপর অমানবিক নির্যাতন চালায় ।তবুও আমি নিজের সন্তানের কথা চিন্তা করে সব কষ্ট ,নির্যাতন নীরবে সহ্য করে আসছিলাম।কিন্তু দিনের পর দিন তার অত্যাচারের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে গেছে।তার সাথে আর সংসার করা সম্ভব নয় ।সেই সাথে ফারহানা তার স্বামী ও দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।।ফারহানার শ্বশুর মোঃ এসলাম বলেন জায়ে জায়ে ঝগড়ার সুত্র ধরে তার স্বামী সোনাবাবু আমার ছোট ছেলে একটু শাসন করেছে।আমার বড় ছেলের নাতীগুলা তার ঘড়ে ঢুকতে গেলে সমস্যা,দুই জানান এক চালায় রান্না করতে সমস্যা ।ছোট ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে তুলকালাম কান্ড সৃষ্টি করে।জায়ে জায়ে বনিবনা না হওয়ার কারণে দুই ছেলেকে পৃথক করে দিয়েছি।তার পরেও কমেনি বিরোধ।আমার ছেলে তার সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছে।পূর্বের দোষ ত্রুটি শোনার পরেও আমি আমার ছেলের কথা চিন্তা করে সব কিছু মেনে নিয়েছি।সে যদি ভাত কাপড় না পেতো আমরা যদি তার সাথে কোন সময় খারাপ আচরণ করতাম তাহলে আমাদের উপর দোষ দিলে মেনে নিতাম।স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হতেই পারে তাই বলে সেই ঘটনাকে কেন্দ্র এত বাড়াবাড়ি করাতো ঠিক না। আর ছেলে কৃষিকাজ করে ।তারা দুজন দুজনকে পছন্দ করেই বিয়ে করছে তবে আজ কেন এত তিক্ততা।আমার দুই ছেলে কেউ আমার কোলের কেউ পিঠের না।আমার কোন মেয়ে নেই ।তাই দুই ছেলের বউকেই নিজের মেয়ে মনি করি।আর আমার ছেলে ও পরিবারের প্রতি যে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে এটা মোটেও ঠিক না।