কক্সবাজারের  কুতুবদিয়ায় আন্তর্জা‌তিক মা‌নের নতুন বাতিঘর পরীক্ষামূলক চালু করা হয়েছে।বাতিঘরের জন্য বিখ্যাত কুতুবদিয়ায়  তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার সমূদ্রে জাহাজ চলাচলের সুবিধার্থে চান্স এন্ড বার্মিংহাম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কুতুবদিয়ার দক্ষিণ ধুরুং আলী ফকির ডেইল গ্রামে ১৮২২ সালে বাতিঘর নির্মাণ শুরু করা হয়। ৮তলা ও ৮ কক্ষ বিশিষ্ট ১২০ ফুট উচ্চতার বাতিঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৮৪৬ সালে। বাতিঘরের ঘুর্ণিয়মান আলোর ছটা দেখা যেত প্রায় ১৯ মাইল দূর থেকে। তথ্যমতে নির্মিত বাতিঘরের ব্যয় ছিল তখন মাত্র ৪ হাজার ৪২৮ টাকা। এটিই ছিল কুতুবদিয়ার বিখ্যাত বাতিঘর।

শতবছর পর শংখ নদীর প্রবল স্রো‌তের ফলে ১৯৫৪ সালে এটির ক্ষতিসাধন হতে থাকে। ১৯৬৫ সালে পাশেই স্টীলের স্ট্রাকচারের ওপর আরেকটি বাতিঘর নির্মাণ করা হয়। কারণ কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত গভীর সাগর পাড়ি দিতে দ্বীপ কুতুবদিয়া ছিল উত্তম স্পট। দূর্ভাগ্যক্রমে ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে নতুন বাতিঘরটিও ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। সেই সাথে ঐতিহাসিক বাতিঘরটির দাড়িয়ে থাকা স্মৃতিটুকুও ভেঙে বিলীন হয়ে যায় সাগরে।সংশ্লিষ্টরা জানান,  দীর্ঘ‌দিন নামমাত্র সু‌বিধা দি‌য়ে সাগ‌রে  বি‌দেশী জাহা‌জ থে‌কে  বা‌নি‌জ্যিক টোল নিত ভারত সরকার। কুতুব‌দিয়ায় আন্তর্জা‌তিক মা‌নের বা‌তিঘর নির্মাণের ফ‌লে ভারত বিরাট অং‌কের রাজস্ব হারা‌বে এখন।

গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তায় বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের প্রকল্প বাতিঘর ও নেভাল রেডিও স্টেশনটি শেষপ র্যন্ত ব‌্যয় ৬০ কো‌টি থে‌কে বে‌ড়ে ৭'শ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন বাতিঘর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ঘুর্ণিয়নমান আলোর ছটা বিকিরণে এটি ফের সাগরে আলোর পথ দেখাবে হাজোরো নাবিককে। টানবে দূরদুরান্তের আগত পর্যটকদের। গত শনিবার এটি পরীক্ষারমূলক ভাবে চালু করেছে বাতিঘর কর্তৃপক্ষ।  

কুতুব‌দিয়া লাইট হাউ‌সের ইনচার্জ মো: র‌ফিকুল ইসলাম ব‌লেন, নতুন বা‌তিঘরের কার্যক্রম গত শ‌নিবার থে‌কে চালু করা হয়ে‌ছে। আন্তর্জা‌তিক মানের  এ লাইটহাউস আগামী ৩০ এ‌প্রিল আনুষ্ঠা‌নিক উ‌দ্বোধন করার সম্ভাবনা র‌য়ে‌ছে। নেভাল রে‌ডিও স্টেশনসহ পু‌রো কার্যক্রম সু‌বিধা থাকায় সমু‌দ্রে বি‌দেশী, দেশী জাহা‌জের রাজস্ব এখন থে‌কে বাংলা‌দেশ পা‌বে ব‌লে তি‌নি ম‌নে ক‌রেন।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024