রংপুরের পীরগাছায় হেযবুত তওহীদ কর্তৃক স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় তৌহিদী মুসলিম জনতা। রংপুর পুলিশ সুপার আবু সায়েমের অনুরোধে বৃহত্তর কর্মসূচির পরিবর্তে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বাদজুম্মা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের নাগদাহ ঈদগাহ মাঠে সংবাদ সম্মেলন করে পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের মাধ্যমে জনগণকে জানাতে চাই। হেযবুত তওহীদ কর্তৃক এলাকাবাসির উপর যে অতর্কিত হামলা। পরে একে একে ছয়টি মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ছিল এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষদের অংশগ্রহণে। কিন্তু রংপুর পুলিশ সুপার আবু সায়েম, ইউএনও, ওসির অনুরোধে ঘোষিত সমাবেশটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবশালী নেতা মনতাজ আলী জিল্লালের নেতৃত্বে তার বাড়িতে হেযবুত তওহীদের একটি সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেন। তার সহযোগিতায় ছোট ভাই হেযবুত তওহীদের রংপুর বিভাগীয় আমির আব্দুল কুদ্দুছ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকেই বিভিন্ন জেলা হতে তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে আসেন। তাদের অনুষ্ঠানগুলোতে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও অংশগ্রহণ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকেই তাদের অনুষ্ঠানস্থলে অনেক নারী-পুরুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করে এলাকাবাসী। নারী-পুরুষ অবাধে মেলামেশার দৃশ্য স্থানীয় সাধারণ মুসলিম জনতা মেনে নিতে পারেননি। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যেন এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট না হয় সেজন্য হেযবুত তওহীদের নেতাকর্মীদের বুঝানোর জন্য সমাবেশস্থলে যান স্থানীয় মাওলানা মিজানুর রহমান ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য নুরুল আলম।
সমাবেশস্থলে পৌঁছামাত্র পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হেযবুত তওহীদের নেতাকর্মীরা স্থানীয়দের উপর চড়াও হয়ে উঠেন। ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন, সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আসিফা আফরোজ আদরী, থানা ওসি নুরে আলম সিদ্দিকী, ডিবি পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাদের সাথে এলাকাবাসি সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করতে উপস্থিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রবিউল ইসলাম আরও জানান, উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে যদি এলাকাবাসির নামে বারবার মামলা হয় তাহলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে কেন কোন মামলা হলো না। কারণ ওই সময়ে এলাকাবাসির সাথে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন।
রংপুর পুলিশ সুপার আবু সায়েম জানান, এলাকাবাসির কর্মসূচি স্থগিত রাখতে বলেছি। শুধু আমি নই জেলা প্রশাসকসহ উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সাথে নিয়ে বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে।