|
Date: 2025-04-28 21:40:41 |
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান শিক্ষার্থী আন্দোলন থামাতে প্রশাসন চাপ প্রয়োগ করছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের নির্দেশে এবার ১০ জন শিক্ষার্থীর নামে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রেজিস্ট্রারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে কার্যালয়ে তালা দেওয়ার পর উপাচার্য নিজে বন্দর থানার ওসিকে ফোন করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ লিটন বাদী হয়ে থানায় জিডি করেন।
থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের কাছে আপাতত ১০ জন শিক্ষার্থীর নামে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।”
জিডিতে নাম উল্লেখ করা শিক্ষার্থীরা হলেন—রাকিন খান (ইংরেজি বিভাগ), নাজমুল ঢালী (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ), মোকাব্বেল শেখ (লোকপ্রশাসন বিভাগ), তরিক হোসেন (আইন বিভাগ), মিজানুর রহমান (ইংরেজি বিভাগ), এনামুল হক (ইংরেজি বিভাগ), এমডি শিহাব (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ), তরিকুল ইসলাম (ইংরেজি বিভাগ), স্বপ্নীল অপূর্ব রকি (কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগ) এবং রফিক (রসায়ন বিভাগ)।
আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণভাবে যৌক্তিক আন্দোলন করছিলেন, অথচ প্রশাসন তা দমনে মামলা ও জিডির আশ্রয় নিচ্ছে।
রাকিন খান বলেন, “বিগত ফ্যাসিবাদি আমলেও এমন যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা মামলা দিয়ে আন্দোলন দমন করা হতো। এখনো আমরা দেখছি আমাদের উপাচার্য আন্দোলন দমন করতে ফ্যাসিবাদের ন্যায় মামালা দিয়ে যৌক্তিক আন্দোলন দমন করতে চাচ্ছে। এসব করে উপাচার্য ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের পথ সুগম করতে চায়। যা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতে করতে দেয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, এসব মিথ্যা মামলা জিডি করে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন থামানো যাবে না।”
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, “ভিসি একদিকে বেআইনি ক্ষমতাবলে স্বৈরাচারের দোসরদের রক্ষা করছেন, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলন দমনে একের পর এক মামলা দিয়ে সকল যৌক্তিক আন্দোলন দমনের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। প্রশাসনের এ ধরনের ফ্যাসিস্ট আচরণ নিন্দনীয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১০ জনের বেশি শিক্ষক জানিয়েছেন, পরিস্থিতির জন্য উপাচার্যের একক সিদ্ধান্ত ও অদূরদর্শিতাই দায়ী। তাদের মতে, প্রশাসনের অগণতান্ত্রিক আচরণ শিক্ষার্থীদের আরও ক্ষুব্ধ করে তুলছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ লিটন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রারের রুমে তালাবদ্ধ করে। এ কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে আমার পক্ষ থেকে জিডি করা হয়েছে। আসলে আমার পক্ষ থেকে বলতে উপর থেকে যে নির্দেশ দেওয়া হয় সেটাই আসলে আমার করতে হয়, অতীতের মামলাগুলোও তাদের নির্দেশক্রমেই করতে হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি এবং উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি।
অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন—দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
© Deshchitro 2024