ভালুকা( ময়মনসিংহ) প্রতিনিধ:ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার নামে সাড়ে ৫ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করা হলেও ওই জমিতে থাকা পাঁচতলা বাড়ির বিষয়টি রেজিস্ট্রিতে উল্লেখ করা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।


ভালুকা পৌর সদরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভালুকা মৌজার বিআরএস ৬৫৮ নম্বর খতিয়ানের ওই জমি ১ ডিসেম্বর রেজিস্ট্রি করা হয়। ওই দলিলে ভবনের বিষয়টি উল্লেখ না করে রাজস্ব ফাঁকিসহ ব্যবহার করা হয়েছে আংশিক ভুয়া নামজারির কাগজ।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভালুকা দলিল লেখক সমিতির দায়িত্বশীল এক ব্যক্তি বলেন, ওই দলিলে (১০০৬৯ নম্বর) ভবনের কথা উল্লেখ নেই। শুধু জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে। চারতলা পর্যন্ত প্রতিটি তলায় ২ হাজার ১৭৮ বর্গফুট। পাঁচতলায় এর অর্ধেক। সেই হিসাবে ভবনের বিষয়টি উল্লেখ করলে বাণিজ্যিক হারে ওই গ্রহীতাকে ১ হাজার ৫০০ টাকা বর্গফুট হিসাবে আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব পরিশোধ করতে হবে।

ভবনের তথ্য বাদ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দলিল লেখক রনি মিয়া বলেন, ভুলক্রমে বাদ পড়েছে। রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, যাঁর নামে জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে, তিনি বাকি টাকা জমা দিয়ে দেবেন।


জমির ক্রেতা আরফে এলাহী বলেন, জমিটি রেজিস্ট্রির পর রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি জানতে পেরেছেন তিনি। রাজস্ব বাবদ বাকি টাকা জমা দিতে দলিল লেখক রনিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ টেকনোলজিস্ট দাবি করে আরফে এলাহী বলেন, ভুয়া কাগজের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।


সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়, দলিল লেখক সমিতির এক ব্যক্তি ও স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, বিআরএস ৬৫৮ নম্বর খতিয়ানের হাইওয়াল বিলের পশ্চিম পাশের সাড়ে ৫ শতাংশ জমিতে নির্মাণ করা পাঁচতলা বাড়িটি বিক্রি করেন মো. মাসুদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। জমিটি কেনেন স্থানীয় আরফে এলাহী। রেজিস্ট্রি করার সময় দলিলে জমির দাম দেখানো হয়েছে ৮০ লাখ টাকা (দলিল নম্বর-১০০৬৯)।

দলিলটি লিখেছেন ভালুকার সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ের দলিল লেখক রনি মিয়া (সনদ নম্বর-৬১৫৯)। দলিলটির শনাক্তকারীও তিনি নিজে। ওই জমিতে পাঁচতলা বাড়ি থাকলেও নতুন করে রেজিস্ট্রিতে তা উল্লেখ করেননি ওই দলিল লেখক। তথ্য গোপনের পাশাপাশি আধা শতাংশ জমির নামজারির ভুয়া কাগজও ব্যবহার করেন তিনি।


ভালুকার সাবরেজিস্ট্রার ইমরুল কায়েস বলেন, ওই দলিল লেখক ও জমির ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে রাজস্বের টাকা জমা দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান। টাকাটা জমা হওয়ার পর ওই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023