লাখাইয়ে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে কেমিক্যাল যুক্ত কলা, যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক।
কলা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি ফল হওয়ায় সর্বত্রই কলার ব্যাপক চাহিদা। আর এটাকে পুঁজি করেই অসাধু ব্যবসায়ীরা অপরিপক্ক ও কাঁচা কলায় ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশাচ্ছে দেদারছে। এই কেমিক্যালের বিষে মাত্র চার ঘন্টায় সবুজ কলা হয়ে যায় হলুদ। বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো এসব কলা মানবদেহের জন্য মারত্মক ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও স্বাচ্ছন্দ্যে বাজারজাত করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। অধিক মুনাফার লোভে ব্যবসায়ীরা দিনকে দিন এই অপরাধমূলক কর্মকান্ডে করলেও প্রশাসনের নজরে আসে না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লাখাই উপজেলার বুল্লাবাজার , কালাউক বাজার,বামৈ মুড়াকরি বাজারে অবস্থিত কলার আড়তগুলোতে এমন বিষক্রিয়াযুক্ত ভেজাল কলা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা এসব কলা পাইকারি কিনে নিয়ে স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করছে। কলাগুলো দেখতে আকর্ষণীয় ও লোভনীয় রঙের হলেও প্রতিটি কলা বিষে ভরা। ফলে স্বাস্থ্যগত দিক থেকে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ক্রেতা বা ভোক্তারা।
আরো জানা যায়, কলার কাদি কাটার আগে পর্যন্ত ভাইরাস তাড়ানোর নাম করে স্প্রের মাধ্যমে নানা কীটনাশক ছড়ায় কলা চাষীরা। এমনকি কলাগুলো উপজেলার বিভিন্ন বাজারগুলোতে প্রবেশের আগেও পাইকাররা আরেক দফায় স্প্রের মাধ্যমে প্রফিট, মার্শাল, হিলডন, রাইজার, বাসুডিন, ইথিলিন ও রাইপেনসহ নানা ধরনের কীটনাশক মেশান। এভাবে দফায় দফায় কেমিক্যাল মিশানোর ফলে কলার পুষ্টি ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যায় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলেছেন , বর্তমানে ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো কলা খেয়ে মানুষ দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে পেটের পীড়া, পাতলা পায়খানা, ডায়াবেটিস, জন্ডিস, গ্যাস্টিক, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, লিভার ও কিডনির সমস্যার মতো জটিল রোগের শিকার হচ্ছে তারা। এছাড়া গর্ভবতী নারীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। এমনকি গর্ভের শিশু বিকলাঙ্গ হতে পারে।এব্যাপারে সেনেটারী ইন্সপেক্টর বিধান সোম বলেন , এসব কলা খাওয়ার সাথে সাথে বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আর রাসায়নিক পদার্থমিশ্রিত খাদ্য গ্রহণের পর তা দাহ্যে পরিণত হয়ে নিঃসারণ ঘটে লিভার ও কিডনির মাধ্যমে। এই কেমিক্যালের প্রভাবে গর্ভবর্তী নারীদের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকি গর্ভজাত শিশু বিকলাঙ্গ হতে পারে। তাই এসব খাবার পরিহার করার পরামর্শ দেন।